দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ মুহূর্তে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা ভোটের মাঠ থেকে একে একে সরে দাঁড়াচ্ছেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) দলটির পাঁচজন প্রার্থী নির্বাচনে না থাকার ঘোষণা দেন। এর মধ্যদিয়ে সবমিলিয়ে গত তিন দিনে জাতীয় পার্টির ১০ প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে গেলেন।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) গাজীপুর-৪, টাঙ্গাইল-৭, চুয়াডাঙ্গা-১, সুনামগঞ্জ-১ এবং দিনাজপুর-২ আসনের প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
এরআগে সোমবার (১ জানুয়ারি) নির্বাচন না করার ঘোষণা দেন হবিগঞ্জ-২ আসনের জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী।
তারও আগে গত ৩১ ডিসেম্বর গাজীপুর- ১, গাজীপুর-৫, বরিশাল-২, বরিশাল-৫ এবং বরগুনা-১ আসনের প্রার্থীরাও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
নির্বাচনে আসা জাতীয় পার্টির নেতারা জানান, নির্বাচনের শুরুতে প্রার্থীদের দল থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। সেজন্য তারা মাঠে নেমেছিলেন। প্রথমে অনেক প্রার্থী নিজ নিজ এলাকায় নিজেদের টাকা খরচ করে পোস্টার ও নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন। কিন্তু প্রার্থীরা এখন দলের প্রতিশ্রুত আর্থিক সাপোর্ট পাচ্ছেন না। ফলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন অনেকে।
আবার অনেকেই মান-সম্মান ও চাপের কারণে নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ালেও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। এখন পর্যন্ত কেন্দ্র থেকেও প্রার্থীদের নির্বাচনের মাঠে রাখার কোনো পরিকল্পনা নেই। কেন্দ্রের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ না করেই প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। বর্তমানে দলটির কতজন প্রার্থী মাঠে আছে, তারও সঠিক হিসাব কেন্দ্রের কাছে নেই!
জাতীয় পার্টির যেসব প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন :
৩১ ডিসেম্বর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন গাজীপুর-১ (কালিয়াকৈর ও সিটির একাংশ) ও গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ ও সদর একাংশ) আসনে জাপার প্রার্থী ও সাবেক সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন। একই দিন সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান বরিশাল ৫ (সদর) ও বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনের ‘লাঙ্গল’ প্রতীকের প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস এবং বরগুনা-১ (তালতলী-আমতলী) আসনের খলিলুর রহমান।
এর আগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা হবিগঞ্জ-২ আসনের জাপা প্রার্থী শংকর পাল।
সর্বশেষ ২ জানুয়ারি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার ঘোষণা দিয়েছেন গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসনের জাপার প্রার্থী মো. সামসুদ্দিন খান, টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের জহিরুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের ‘লাঙ্গল’ প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন, সুনামগঞ্জ-১ আসনের (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, মধ্যনগর) আবদুল মান্নান তালুকদার এবং দিনাজপুর-২ (বিরল-বোচাগঞ্জ) আসনের মাহবুব আলম।
এখন পর্যন্ত যে সব প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন, তারা সবাই জাতীয় পার্টির জন্য আওয়ামী লীগের ছেড়ে দেয়া ওই ২৬টি আসনের বাইরের আসনগুলোর প্রার্থী। কিন্তু ওই ‘ছেড়ে দেওয়া’ আসনগুলো থেকে এখনো কেউ সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেননি।
মন্তব্য করুন