পুলিশি বাধায় ভোটাধিকার হরণ ও নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংসের প্রতিবাদে গণঅধিকার পরিষদের পূর্বঘোষিত কফিন মিছিল কর্মসূচি পণ্ড হয়ে গেছে। পুলিশি বাধা ও ধস্তাধস্তিতে দলটির শীর্ষ নেতারাসহ অনেকে নিচে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন। শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকি মোড়ে সমাবেশ শেষে কফিন মিছিল শুরু করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।
গণঅধিকার পরিষদের নেতারা জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিজয়নগর পানির ট্যাংকি মোড়ে সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশ শেষে কফিন মিছিল করতে গেলে পুলিশ মারমুখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। কফিন মিছিল বন্ধ না করলে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁনকে আটকের হুমকি দেয়। নেতারদর সাথে ধস্তাধস্তি করে লাথি দিয়ে কফিন ভেঙে ফেলে। পুলিশি বাধা ও ধস্তাধস্তিতে শীর্ষ নেতারাসহ অনেকে নিচে পড়ে গিয়ে আহত হয়।
কফিন মিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ৬০ শতাংশ ভোট কেটে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। জনগণের ভোটাধিকার হরণ ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংসের প্রতিবাদে আজকে আমাদের এই কফিন মিছিল। গণতন্ত্র এখন কফিনে, আমরা গণতন্ত্রের পুনর্জাগরণ চাই। মারামারি, হানিহানি, হত্যার রাজনীতির অবসান চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলতে চাই, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। ভয় পাবেন না, আমরা কথা দিচ্ছি- আপনার পাশে থাকব। আমরা তো বলছি, প্রয়োজনে ২/১ বছরের জন্য জাতীয় সরকার হোক। জাতীয় ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠা করে দেশকে এগিয়ে নিতে চাই।
এদিকে কফিন মিছিলে পুলিশি বাধা ও কফিন ভাঙচুরের পর নুরুল হক নুর বলেন, আমরা দুই-আড়াইশো লোক শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করতে চেয়েছিলাম। সেখানে পুলিশ বাধা দিয়েছে, গুণ্ডা-মাস্তানদের মতো লাথি দিয়ে আমাদের কফিনটি ভেঙে ফেলল। এটি কি পুলিশ করতে পারে? কোন আইনে তারা এসব করতে পারে? আমাদের চেয়ে পুলিশের সংখ্যা বেশি, তাদের অনেকের হাতে ইলেকট্রিক শক লাঠি, টিপ ছুরির মতো জিনিস ছিল। ভিড়ের মাঝে কাউকে ছুরিকাঘাত করা বা পুলিশেরই কোনো সদস্যকে ছুরিকাঘাত করে আমাদের ওপর দায় চাপাতো। যেভাবে ২৮ অক্টোবর ছাত্রলীগ-যুবলীগকে দিয়ে পুলিশ হত্যা করে মির্জা ফখরুলদের আসামি করেছে।
দলের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, নির্বাচনী আমেজ তৈরি করতে ক্রিকেটার, নায়ক-নায়িকা-গায়িকাদের প্রার্থী করেছে আওয়ামী লীগ। তাদের মাধ্যমে জনগণকে ভোটকেন্দ্রে আনার চেষ্টা করছে। কিন্তু সাধারণ জনগণ বলছে, তারা ভোটকেন্দ্রে যাবে না, আওয়ামী লীগকে ভোট দিবে না।
তিনি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান রাখতে চাই- আপনি সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের উদ্যোগ নিন। এখনও সময় আছে, একতরফা নির্বাচন থেকে ফিরে আসুন। এটি আওয়ামী লীগ ও দেশের জন্য কল্যাণকর হবে।
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য শাকিল উজ্জামানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, আব্দুজ জাহের, সিনি. যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, যুবঅধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সম্পদ, গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিল, ছাত্র নেতা সম্রাট, যুবনেতা সবুজ প্রমুখ।
মন্তব্য করুন