নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে শোকজ নোটিশ পান নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ কে এম শামীম ওসমান। নোটিশ পাওয়ার একদিন পর অনুসন্ধান কমিটির কাছে স্ব-শরীরে হাজির হয়ে নিজ অবস্থান ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি।
এ সময় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ নোটিশ পেয়ে আমার দুঃখিত হওয়ার কথা, কিন্তু আমি আনন্দিত হয়েছি।’
রোববার (৩ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কাজী ইয়াছিন হাবীবের কাছে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দেন শামীম ওসমান। এ সময় তিনি বলেন, ‘গত শুক্রবার আমার নির্বাচনী এলাকা ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জের প্রতিটি পাড়া মহল্লায় বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াও এবং মানুষ হত্যার প্রতিবাদে শান্তি মিছিল করেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এটা কোনো নির্বাচনী প্রচারণা ছিল না। এটা রাজনৈতিক কর্মসূচি। কিন্তু এ কারণে আমাকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অথচ এ মিছিলে আমি ছিলাম না। তার পরও আমাকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবুও বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে আমি ধন্যবাদ জানাই। কমিশন নিয়ে আমি গর্ববোধ করি। কমিশন প্রমাণ করেছে তারা স্বাধীন।’
শামীম ওসমান আরও বলেন, ‘আমি অনেক নির্বাচনে অংশ নিয়েছি, আবার অনেক নির্বাচন দেখেছি, কখনও দেখিনি পত্রিকার খবরে প্রার্থীকে তলব করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন প্রমাণ করেছে তারা যথেষ্ট শক্তিশালী। তাদের দক্ষতা আছে দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়ার।’
শামীম ওসমান মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন জানিয়ে বলেন, ‘জাতিসংঘ বলেছে সবার অংশগ্রহণের কথা। এখন দেখতে হবে জনগণ অংশগ্রহণ করছে কি না? কিছু পত্রিকা সবার অংশগ্রহণ বলতে ইনিয়ে-বিনিয়ে বিএনপি-জামায়াতের অংশগ্রহণের কথা বলার চেষ্টা করছে। আমি এই মুহূর্তে মনোনয়ন ছেড়ে দেব যদি জাতিসংঘ ৩টা কাজ করতে পারে। ফিলিস্তিনে যে ধ্বংসযজ্ঞ চলছে তা যদি জাতিসংঘ বন্ধ করতে পারে, যদি ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমিতে ফিরিয়ে দিতে পারে, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে পারে এবং বাংলাদেশে যে ১২ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে তাদের মিয়ানমার ফিরিয়ে দিতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দল কাকে বলে, যারা পাঁচশ মানুষ আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে, এখনও তারা আগুন সন্ত্রাস করছে, ওদের কী রাজনৈতিক সংগঠন বলবেন, না সন্ত্রাসী সংগঠন বলবেন। বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের তরুণরা প্রমাণ করবে বাংলাদেশ কারও সামনে মাথা নত করার দেশ না।’
শামীম ওসমান বলেন, ‘আমি নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটিকে অনুরোধ করেছি, শুধু প্রার্থী নয়, যারা নির্বাচন বানচাল করতে সারা দেশে আগুন সন্ত্রাস করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। যেহেতু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখন কমিশনের অধীনে, সেহেতু মানুষের শান্তিপূর্ণ ভোট দেওয়া নিশ্চিত করতে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে।’
মন্তব্য করুন