গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের পর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনসহ বিরোধী দলের অনেক নেতা আত্মগোপনে রয়েছেন। ২৮ অক্টোবরের সংঘর্ষের পর থেকে প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচিতে দেখা যায়নি তাকে। তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার ছোট ভাই ইশফাক হোসেনকে।
তবে হঠাৎ শনিবার (২৫ নভেম্বর) চলমান আন্দোলন নিয়ে নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও বার্তা দেন তিনি।
ভিডিও বার্তায় ইশরাক বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বর্তমান অবৈধ ফ্যাসিস্ট বাকশালী সরকার আরেক দফা ক্ষমতা দখলের জন্য পাঁয়তারা করছে। তারা জনগণের রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করার প্রক্রিয়া এখনো অব্যাহত রেখেছে। সব মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে এ সরকার। এ সরকার বিরোধী দলকে হত্যা করে হোক ও কারান্তরীণ করে হোক, তারা শাসন ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করছে এবং করবে।
জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইশরাক বলেন, বর্তমানে যে কর্মসূচি চলছে, শুধু বিএনপির কর্মসূচি নয়। এটি সর্বসাধারণের কর্মসূচি। তাই জনগণ বাস্তবায়ন করছে। ভবিষ্যতেও কর্মসূচি আসলে সর্বাত্মকভাবে পালনের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে—এ কর্মসূচি কতদিন চলবে? কতদিনে সরকার পতন হবে? আমাদের ওপর আস্থা রাখুন। কিছু দিনের মধ্যে আপনারাই উপলব্ধি করতে পারবেন আন্দোলনের সুফল।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৩ দিন হরতাল করেছিল। ব্যাপক জ্বালাও-পোড়াও ক্ষতিসাধনের মাধ্যমে ভয়ংকর পরিস্থিতি দাঁড় করিয়ে তাদের দাবি আদায় করেছিল। আমরা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি। সেটির মাধ্যমে যে অবৈধ অর্থনীতি ও লুটপাটের অর্থনীতি সেটি দুর্বল করে আমরা সরকারকে বাধ্য করব।
আগামীতে আন্দোলনের মাধ্যমে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বfবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য বাধ্য করা হবে। পরে সুষ্ঠু নির্বাচন ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। এটির জন্য বর্তমান কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়ন করতে সবার সহযোগিতা জরুরি।
ইশরাক বলেন, একশ্রেণির মানুষ এখনো এ অবৈধ সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই—এখনো সময় আছে। যারা সহযোগিতা করছে, তাদের চিনি আমরা। তারা জনগণের টাকার নিয়ে ব্যবসা করে। আমি বলব, দেশের মানুষের সঙ্গে বেইমানি করবেন না। জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করবেন না। আর করলে এটার পরিণতি ভালো হবে না।
বিএনপির কর্মসূচির ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি বলেন, সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত চলমান আন্দোলন শিথিল করার সুযোগ নেই। আরও কঠিন কর্মসূচি দেওয়া হবে।
এদিকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে টানা কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। এর অংশ হিসেবে ৭ম দফা ঘোষিত কর্মসূচি ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ চলছে।
মন্তব্য করুন