আন্দোলন দমাতে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সারা দেশে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সারা দেশে প্রতিদিনই অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কারও বাসাবাড়িতে তল্লাশির নামে হামলা ও ভাঙ্চুর করা হচ্ছে। শর্টগান থেকে গুলি ছোড়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, তবে আমি আস্থা রাখি, যেসমস্ত কর্মসূচি হয়েছে পূর্বে সেই সমস্ত কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় আমাদের নেতাকর্মীর অত্যন্ত বীরত্ব ও সাহসিকতার সাথে দৃঢ় প্রত্যয়ে আগামী ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি সাফল্যমণ্ডিত করবেন।
এই পর্যন্ত সবগুলো অবরোধ কর্মসূচি সফল করায় নেতাকর্মীদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে এবং দৃঢ় প্রত্যয়ে ধারাবাহিক অবরোধ কর্মসূচিকে সাফল্যমণ্ডিত করছেন। তারা রাস্তায় আছেন, দাঁড়াচ্ছেন... এত প্রতিকূলতা, এত জুলুম নির্যাতন, একদিকে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অন্যদিকে যুবলীগ-ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তারা রাজপথে যেভাবে নেমেছেন এটি একটি সাহস ও বীরত্বব্যাঞ্জক ঘটনা। তারা সাহসের ওপর ভর করে এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আদর্শগত লড়াইয়ে আছেন। তারা কোনো ভোগ-বিলাস, কোনো অর্থ কড়ির জন্য এই কর্মসূচি করছে না। তারা কর্মসূচি করছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য। তাই এত জুলুম, এত নিপীড়ন-নির্যাতন, ডিবি অফিসে নিয়ে গিয়ে তাদের যেভাবে আঙুল তুলে দেওয়া হচ্ছে... এই নিপীড়ন-নির্যাতন সহ্য করেও তাদের বিজয়রথ ইনশাআল্লাহ একদিন লক্ষ্যস্থলে পৌঁছাবে এই প্রত্যাশা করছি।
সারা দেশে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, হামলা ও আহত প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের মোট গ্রেপ্তার ৪১০ জনের অধিক নেতাকর্মী, মোট মামলা ১৭টি, মোট আসামি ১৯২০ জনের অধিক নেতাকর্মী, মোট আহত ১০০ জনের অধিক নেতাকর্মী।
তিনি জানান, গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত মোট গ্রেপ্তার ৩৫৮৫ জনের অধিক নেতাকর্মী, মোট মামলা ১১৫টি, মোট আসামি ১৩৪৪০ জনের অধিক নেতাকর্মী, মোট আহত ৫১২ জনের অধিক নেতাকর্মী, মোট মৃত্যু ২ জন। তা ছাড়া গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের আগে-পরে অদ্যাবধি গ্রেপ্তার ১৫৬০০ জনের অধিক, মোট মামলা ৩৮৪টির অধিক, মোট আহত ৪৫৬৮ জনের অধিক, মৃত্যু ১৪ জন। ২৭টি মিথ্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও প্রায় ৪১৯ জনের বেশি নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন