ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এরই মধ্যে সারা দেশে বইতে শুরু করেছে নির্বাচনী হাওয়া। নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কথা বলছে নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া মনোনয়নপত্র বাছাই চলবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এজন্য মনোনয়ন ফরম কেনা ও জমা দেওয়া শুরু করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। পছন্দের দলের মনোনয়ন তুলছে অনেকেই। তবে আমরা কি জানি, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে কি কি যোগ্যতা থাকতে হয়।
সংবিধানে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, প্রার্থী হতে আগ্রহী ব্যক্তিকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে এবং তার বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হতে হবে। কোনো আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বা পাগল বলে ঘোষণা করা হয়নি এমন ব্যক্তি। এ ছাড়া কোনো ব্যক্তি নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধের দায়ে দুই বছরের কারাদণ্ডের পর মুক্তি পাওয়ার পাঁচ বছর পার না হলে তিনি প্রার্থী হওয়ার জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন।
অন্যদিকে, কোনো ব্যক্তি বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করলে বা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য স্বীকার বা ঘোষণা করলে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন না। এ ছাড়া কেউ দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী হলে প্রার্থী হতে পারবেন না। পাশাপাশি সরকারের কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকলে তিনি প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য হবেন।
সংবিধান ছাড়াও ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২ ধারাতেও সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে বলা হয়েছে। এই ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি প্রার্থী হতে পারবেন না যদি তিনি কোনো নির্বাচনী এলাকার ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত না থাকেন। এ ছাড়া তিনি কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন না পান বা স্বতন্ত্র প্রার্থী না হন। একই সঙ্গে দুর্নীতির কারণে কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বরখাস্ত বা অপসারিত বা বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত এবং এ ঘটনার পর যদি পাঁচ বছর অতিবাহিত না হয় তবে তিনি অযোগ্য হবেন।
কোনো ব্যক্তি সরকারের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্কে জড়িত থাকলে তিনি সংসদ সদস্য পদে লড়তে পারবেন না। তিনি যদি এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হন যারা কোনো ব্যাংক থেকে ঋণ পরিশোধ বা কিস্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছে, তবে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন না। প্রার্থী হিসেবে কেউ যোগ্য হলে পরবর্তী ধাপ হিসেবে তাকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে।
এদিকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরও বেশকিছু কারণে বাতিল হতে পারে মনোনয়ন। মূলত নির্বাচন কমিশন থেকে প্রকাশিত নির্দেশিকার তথ্য অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় তথ্যে কোনো ঘাটতি থাকলে কিংবা ভুল তথ্য দিলে বাতিল হতে পারে প্রার্থিতা। ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১৪ নম্বর বিধান অনুসারে মনোনয়নপত্র গ্রহণ বা বাছাইয়ের পর সেটি বাতিল বা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন রিটার্নিং অফিসার। তবে নির্বাচন কমিশন প্রার্থীর আবেদন বাতিল করলে হাইকোর্টে আবেদন করতে পারবেন তিনি। হাইকোর্টের অনুমতিতে ওই প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।
মন্তব্য করুন