শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিএনপির হামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক সদস্য নিহত, ১১৫ জন আহত ও ২৬ গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রোববার জাতীয় সংসদে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) পুলিশকে মারল, সাংবাদিক মারল, আমাদের মহিলা লীগের মেয়েদের গায়ে হাত তুলল। তাদের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করল। তারাই আবার হরতাল ডাকল। হরতাল ডেকে তারা ক্ষান্ত হননি। বাসে অগ্নিসংযোগ করে। সেই বাসে ঘুমিয়ে থাকা হেলপারকে পুড়িয়ে মেরেছে। এ ঘটনা ২০১৫ সালের ঘটনা মনে করিয়ে দেয়। তারা সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে। মনে হয় তারা ব্যাগ ও পকেটে ভরে ইট পাটকেল নিয়ে এসেছিল।
শনিবারের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি একটি অসাংবিধানিক সাবজেক্ট নিয়ে জনসমাগম করেছে। আমরা তাদের একটি মাঠে যেতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা যায়নি। তাদের দলের কার্যালয়ের সামনে করতে চেয়েছিল। তারা নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফরিকাপুল মোড় পর্যন্ত অবস্থান করবে বলে আমাদের জানিয়েছিল। এরমধ্যে তারা থাকবেন। পাশাপাশি আওয়ামী লীগকেও একটি সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমরা দেখলাম তারা ইচ্ছা করেই নাইটিঙ্গেল মোড় ছেড়ে আইইডিবি ভবন ছাড়িয়ে গেল। আমাদের যুব মহিলা লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগের কর্মীরা প্রধান বিচারপতির বাসভবনের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখনই লাঠিসোটা নিয়ে তাদের ওপর আক্রমণ ও তাদের গাড়ি পুড়িয়ে দিল। সেই সময় পুলিশ তাদের রেসকিউ করে। তাদের সরিয়ে দেওয়ার সময়ে প্রধান বিচারপতি বাসায় তারা জোর করে ঢুকে গেল। এ ধরনের ঘটনা কোনোদিন আমরা দেখিনি। তখন বাধ্য হয়ে পুলিশ তাদের ওখান থেকে ডেসপাচ করল। তারা যাওয়ার পথে আইইডিবি ভবনে ঢুকে ওখানকার গাড়িগুলোতে অগ্নিসংযোগ করল। সেখানে ভাঙচুর করল।
মন্ত্রী বলেন, তারা আমাদের বলেছিল তারা কোনো ধরনের সহিংসতা করবে না। তারা সমাবেশ শেষ করে চলে যাবে। আমাদের পুলিশ বাহিনী যখন তাদের নাইটিঙ্গেল মোড়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হলো। তখন দেখলাম পুলিশ সদস্যের ওপর বৃষ্টির মতো ঢিল ছুড়ল। এটা চোখে না দেখলে অনুমান করা যাবে না। মনে হয়েছিল তারা ব্যাগে করে ইটপাটকেল নিয়ে এসেছিল। সেগুলো পুলিশের গায়ে ছুড়ছিল সেখানে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী ছিল না। সেই ঢিলের আঘাতে একজন পুলিশ সদস্য পড়ে গিয়েছিল। দেখলাম ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে পিটাচ্ছে। এরপর পুলিশ হাসপাতাল যেখানে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়- আহত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। আর কেবল পুলিশ নয়, সংবাদকর্মীদের ওপরও তারা চড়াও হলো। তাদের বেধড়ক পিটানো হয়েছিল। তারাও পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। একজন পথচারীও সেখানে সেবা নিতে গিয়েছিল। সেই সময় পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে হামলা করল। পুলিশের গাড়ি অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করল।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি ইসরায়েল গাজার হাসপাতালে সামরিক অভিযান করেছে। সারা পৃথিবী ঘটনাটিকে নিন্দা করেছে। সেই দৃশ্যপট আমরা এখানেও দেখলাম। এ ধরনের নৃশংসতা ও বর্বরতা কোনো মানুষ সহ্য করবে না।
মন্ত্রী বলেন, পুলিশ বাহিনী ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। ধৈর্যের সাথে মোকাবিলা করে কর্তব্য পালন করছেন। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন