বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘সারা দেশে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে মানুষের এখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। গ্রামে-গঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় এখন ২-১ ঘণ্টা বিদ্যুৎ আসে। মফস্বল শহরগুলোতে রাতে দুই ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকে না। দিনের বেলাতেও ৫-৬ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকে। রাজধানীতে ভয়াবহ খরতাপের ধূমায়িত বহ্নিতে মানুষ মনে হয় গ্যাস চেম্বারের মধ্যে বসবাস করছে। এখানেও দিনে-রাতে ৩-৪ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকে না।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গণতন্ত্রকে কাফন পরিয়ে তথাকথিত উন্নয়নের ইন্দ্রজাল সৃষ্টির অপপ্রয়াস এখন দেশবাসী দেখছে। লোডশেডিংয়ে সরকারের উন্নয়নের ফানুস স্বমূর্তিতে প্রকাশ পাচ্ছে।’
রিজভী আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘প্রয়োজনে আমেরিকা যাব না। প্রয়োজনে অন্য মহাদেশ-মহাসাগরে যাব। ২০ ঘণ্টার ভ্রমণ করে আমেরিকা যাওয়ার দরকার নাই।’ অন্যদিকে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনসহ মানবাধিকার, ন্যায়বিচার, সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ ও হারানো গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার পক্ষে কথা বলায় বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা। তাদের একজন মন্ত্রী বললেন, ভিসা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা নাকি বিএনপির বিরুদ্ধে। তাহলে আমেরিকার বিরুদ্ধে হঠাৎ সরকারপ্রধানসহ মন্ত্রীরা ক্ষোভে ফেটে পড়লেন কেন?”
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার স্পষ্টতই বুঝে গেছে যে, তারা এখন চরম সংকটের মধ্যে পড়েছে। সে কারণে মনে হয় রাতে তাদের ঘুম কম হচ্ছে। সে জন্য প্রায়ই তাদের অসংলগ্ন কথাবার্তা দেখে তাই মনে হয়। স্বাভাবিক চিন্তা, কথাবার্তা ও আচরণের জন্য প্রকৃতির নিয়মে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রীদের পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু তাদের (সরকার) মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু দুর্নীতি আর টাকা পাচার, সেহেতু তাদের বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকার বিষয়ে কেউ প্রশ্ন উত্থাপন করলেই তাদের গা জ্বালা করে। জনগণের টাকায় তারা ফুর্তিবাজি করছে বলেই সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা শুনলেই ক্ষমতাসীনদের মাথা বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ে।’
বিদ্যুৎ প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘শুধু নিজেদের ঘনিষ্ঠজনকে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক করার জন্যই রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ভর্তুকির নামে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা পকেট থেকে কেটে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এটি যে ছিল এক ধরনের জালিয়াতি, সেটিই এখন বিকট লোডশেডিংয়ের আত্মপ্রকাশ।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো. আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মীর সরফত আলী সপু, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, মো. মুনির হোসেন, আসাদুল করিম শাহিন, সেলিমুজ্জামান সেলিম, আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, আমিনুল ইসলাম, তারিকুল আলম তেনজিং, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।
মন্তব্য করুন