আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা শুধু একজন রাজনীতিবিদের নাম নয়, এক সংগ্রামী উপাখ্যানের নাম। লড়াই-সংগ্রাম, উন্নয়ন-অগ্রগতি ও গণতন্ত্রের নাম শেখ হাসিনা। তিনি এ দেশে গণতন্ত্রের প্রতীক, আবহমান বাংলার সংস্কৃতির প্রতীক, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতীক।’
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে কৃষক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর বাতাসের বিপরীতে উজান ঠেলে যে নেত্রী মা-বাবা-ভাই, আত্মীয়-পরিজন সবাইকে হারিয়ে এ দেশের মানুষকে আপন করে দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন, তিনি হচ্ছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।’
শেখ হাসিনাকে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী’ বর্ণনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বারবার মৃত্যু উপত্যকা থেকে ফিরে এসে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বিচলিত হন নাই, দ্বিধান্বিত হন নাই। বরং দৃপ্ত পদভারে জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে দেশের সংগ্রামের কাফেলাকে, মানুষের ভোট এবং ভাতের অধিকার আদায়ের কাফেলাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর মতোই জননেত্রী শেখ হাসিনাও ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেন নাই। সেটি করলে ১৯৮২ সালেই তিনি ক্ষমতায় যেতে পারতেন। কিন্তু তিনি মানুষের অধিকার আর দেশের অগ্রগতির জন্য রাজনীতি করেছেন।’
ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামে পাখি শিকারের মতো মানুষ শিকার করে শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টা হয়েছে, আমাদের ৩২ জন নেতা-কর্মী সেদিন শহিদ হয়েছিল। আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট প্রকাশ্য দিবালোকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রীকে বৃষ্টির মতো গ্রেনেড ছুড়ে হত্যার অপচেষ্টা করা হয়েছে। কোটালীপাড়ায় ৭৬ কেজি বোমা পুঁতে তাকে হত্যার অপচেষ্টা হয়েছে। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে বিএনপি ও ফ্রিডম পার্টির সন্ত্রাসীরা শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টা চালিয়েছে, সারা দেশের পথে পথে তার ওপর বারবার হামলা করেছে। কিন্তু শেখ হাসিনা মৃত্যুঞ্জয়ী।’
এদিন সমসাময়িক রাজনীতি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, ‘যারা দেশে দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে আজকে বিএনপি-জামায়াত তাদের হাতে, বিশ্ববেনিয়াদের হাতে দেশটাকে তুলে দিতে চায়। দেশটাকে তারা আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্রীড়াক্ষেত্রে পরিণত করতে চায়। কিন্তু এ অপচেষ্টায় কোনো লাভ হবে না।’
নির্বাচন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে, নির্বাচন ভণ্ডুল করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার অনেক অপচেষ্টা হচ্ছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই অপচেষ্টা যারা করছে সেই বিএনপি হচ্ছে ছাগলের তিন নম্বর ছানা। তাদের কেউ বাতাস দিচ্ছে এবং সেই বাতাসে ফখরুল সাহেব লাফাচ্ছেন। তারা লাফাতেই থাকবেন আর এদিকে যথাসময়ে নির্বাচন হবে। আর সেই নির্বাচনে আবারও ধস নামানো বিজয়ের মাধ্যমে গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনা আবার দেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনে আসীন হবেন ইনশাআল্লাহ।’
কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন এবং আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি। পরে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ সবাইকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটেন ও প্রধানমন্ত্রী এবং দেশ-দশের মঙ্গল কামনায় দোয়ায় অংশ নেন।
মন্তব্য করুন