বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, বর্তমান সরকার মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে নিবার্চন ব্যবস্থাকে ধ্বংস ও গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। ফলে এই সরকারের অধীনে আর কোনো সাজানো নিবার্চন নয়, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করে তার অধীনে নির্বাচনের মধ্যমে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। তাহলেই দেশ ও জাতির কল্যাণ হবে। ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তর করে চলে যেতে হবে নতুবা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জামায়াতে ইসলামী চলমান আন্দোলনকে তীব্র থেকে তীব্রতর করে এই সরকারের পতন নিশ্চিত করবে ইনশাআল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের উদ্যোগে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জীবনীর ওপর ‘সিরাত পাঠ প্রতিযোগিতা-২০২২’ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির ও অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন, কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসেন খান ও ড. মোবারক হোসেন, বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম প্রমুখ নেতারা।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, পৃথিবীর কোনো পুরস্কারই আসল নয়। আল্লাহর সামনে আখিরাতে বিজয়ী হওয়াই হচ্ছে মানুষের চরম সফলতা। তাই আখিরাতমুখী জীবনযাপনে আমাদের সর্বদা প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বর্তমান সরকারের সকল ব্যর্থতার মূল কারণ হচ্ছে, কুরআন সুন্নাহ্কে বাদ দিয়ে নিজেদের মনগড়া বিধান অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করা। অথচ আধুনিক বিশ্বের সকল সংকট উত্তরণে রাসুল (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণই একমাত্র সমাধান। আইয়্যামে জাহেলিয়াত বা অন্ধকার যুগে রাসুল (সা.) ইসলামের সুমহান আদর্শের মাধ্যমে যেভাবে পুরো জাতিকে আলোর পথ দেখিয়েছিলেন, তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাংলার এই সবুজ ভূখণ্ডে একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। তিনি সকলকে এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, প্রত্যেক মুসলমানকে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন জানা এবং তা অনুসরণ করা অতিব জরুরি, এটা ঈমানেরই অংশ। তিনি সমাজ ও রাষ্ট্রে কুরআন ও সুন্নাহকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কুরআনের এই বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য ৮০টির ওপরে যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন এবং ২৩টির অধিক যুদ্ধে সেনাপতি হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সেই রাসুলকে অনুসরণ করলে দুনিয়ার কোনো প্রতিযোগিতায় পুরস্কার না পেলেও কেয়ামতের দিনে আমরা নিশ্চিত পুরস্কার পাব ইনশাআল্লাহ।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, রাসুল (সা.)-এর সিরাতকে সামনে রেখে ইকামতে দ্বীনের কাজকে বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি যেভাবে হিকমা ও কৌশল শিখিয়েছেন সেভাবে ইসলাম কায়েমের জন্য কাজ করে যেতে হবে। তাহলে দুনিয়ার কোনো শক্তিই আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না। স্বাধীনতা পরবর্তী যারা ক্ষমতায় এসেছে সুপরিকল্পিতভাবে জামায়াতে ইসলামীকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। আমাদের শীর্ষ নেতাদের সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে। রাসুল (সা.)-এর যুগেও এই জুলুম নির্যাতন ছিল, তিনি যেভাবে সবকিছু সহ্য করে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছেন ঠিক তেমনিভাবে আমাদেরও বাংলার জমিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে হবে। ইসলামের মানদণ্ডে সবকিছু পরিচালনা করতে হবে। আজ বাংলাদেশে স্বাভাবিকভাবে বাঁচার পরিবেশ নেই, সঠিক কথা বলার অধিকার নেই, নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য কথা বললে যে কোনো সময় গুম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ অবস্থা থেকে দেশের মানুষকে মুক্ত করার জন্য এই সরকারের পতন ও কেয়াটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সবাইকে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে।
সিরাত প্রতিযোগিতায় বিজয়ী যারা :
সিরাত পাঠ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা হলেন- ‘ক’ গ্রুপে প্রথম- সামমুদ্দোহা আব্দুল্লাহ্ শিবলী নোমানী, দ্বিতীয়- মুজাহিদুল ইসলাম, তৃতীয়- মো. সোলাইমান, চতুর্থ- জয়নাল আবেদীন, পঞ্চম- আবু জাফর। ‘খ’ গ্রুপে প্রথম- ইদ্রিস হাওলাদার, দ্বিতীয় আ. হামিদ রুকন, তৃতীয়- হাসানুল বান্না, চতুর্থ-হাফেজ মহিবুল ইসলাম, পঞ্চম- শাহাদাত হোসাইন। ‘গ’ গ্রুপে প্রথম- বনি ইয়ামিন মিয়াজী, দ্বিতীয়- গিয়াস উদ্দীন, তৃতীয়- মো. জাকির হোসেন, চতুর্থ- তমিজ উদ্দিন সরোয়াদ্দী, পঞ্চম- শরিফুল ইসলাম। বিজয়ীদের নগদ টাকা, আকর্ষণীয় বই সেট ও ক্রেস্ট উপহার দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন
আর্কাইভ 
| ১৪ মার্চ ২০২৫ 
