‘বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ’ নামে নতুন একটি ছাত্রসংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে শিক্ষার্থীদের এক উৎসবমুখর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সংগঠনের ৭১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
কমিটিতে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা রয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচিত সাবেক ছাত্রনেতা ও সংগঠনটির অন্যতম উপদেষ্টা নাসির আব্দুল্লাহর সূচনা বক্তব্য এবং নবঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব আশরাফুল ইসলাম নির্ঝরের পরিচালনায় নতুন ছাত্র সংগঠন করার প্রেক্ষিত, উদ্যোক্তাদের রাজনৈতিক পরিচয়, সখ্য ও সংঘবদ্ধতার ইতিহাস, দলের লক্ষ্য ও ছয় দফা কর্মসূচি তুলে ধরে বক্তব্য দেন প্রধান উদ্যোক্তা ও নবঘোষিত আহ্বায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স।
তিনি চীনের জিয়াংশুতে অবস্থিত ইয়াংচ্যাং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে স্নাতক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ভাষা বিভাগের ছাত্র। নতুন এই ছাত্র সংগঠনের বেশিরভাগ সদস্যরাই ২০১৮ সালে সংগঠিত ছাত্রদের স্বতঃস্ফূর্ত কর্মসূচি ‘নিরাপদ সড়ক আন্দোলন’ ও ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন’র সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
ঘোষণাপত্রে ‘নিরাপদ সড়ক আন্দোলন’র অন্যতম কিশোর সংগঠক মোহাম্মদ প্রিন্স বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময়ে ব্যাপকভিত্তিক পরামর্শ ও গবেষণার পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রসমাজের মূল সংকট হিসেবে রাজনৈতিক অসচেতনতাকে চিহ্নিত করেছি। দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সংকট হিসেবে চিহ্নিত করেছি স্বপ্নহীন শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের অকার্যকর নাগরিকের আঁতুড়ঘরে পরিণত হওয়া। তাই স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লিখিত তিন মূলনীতি—সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের আলোকে শিক্ষার্থীদের রাজনীতি সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাই আমাদের সংগঠনের মূল লক্ষ্য।’
ঘোষণাপত্র পাঠ শেষে দলের ৭১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষের অন্যতম উপদেষ্টা সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট আলী নাসের খান। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন ছাত্রপক্ষের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ব্যারিস্টার যুবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক এবং ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষের প্রধান উপদেষ্টা ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘আমাদের গত ৬০-৭০ বছরের ছাত্র রাজনীতির সবচেয়ে বড় সংকট হলো জাতিসত্তা গঠন ও তার মননশীলতার বিকাশে কোনো তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে না পারা। শুধু ক্ষমতার বলয়কেন্দ্রিক হাতিয়ার ও লাঠিয়াল হিসেবে কাজ করতে গিয়ে ছাত্রসমাজের শুধু অপূরণীয় ক্ষতিই হয়নি, বরং পুরো ছাত্র রাজনীতির ব্যাপারেই একটা অনীহা জন্মেছে। যার ফল হচ্ছে সৎ, মেধাবী ও চৌকশ তরুণরা বেশি মাত্রায় ক্যারিয়ার প্রিয় হয়ে উঠেছে, দেশ ও জাতির সেবা করার কোনো প্রত্যয় বা আকাঙ্ক্ষা তাদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে না।’
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান শেষে আহ্বায়ক কমিটির উদ্যোগে একটি র্যালি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিজয় ৭১ চত্বরে এসে শেষ হয়।
মন্তব্য করুন