সরকারের অভ্যন্তরে দুর্নীতির প্রতিবাদে মার্চ টু দুদক কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ। রোববার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় প্রেস ক্লাবের সামনে গণজমায়েত হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্দেশ্যে মার্চ শুরু করেন।
যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন ও সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসানের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল দুদক চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ১৫ দিনের ভিতরে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। প্রতিনিধিদলে অন্য সদস্যরা হলেন- অর্থ সম্পাদক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, সহসভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান জসিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা হক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান সকাল।
দুদক কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন আওয়ামী লীগের তৎকালীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএসের গাড়িতে টাকা পাওয়া গিয়েছিল, সে সময়ই এর দায় নিয়ে তিনি মন্ত্রণালয় হারিয়েছিলেন। সুতরাং এখনকার যে সব উপদেষ্টার পিএসের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে সেসব উপদেষ্টা নৈতিকভাবে আর পদে থাকতে পারেন না। তাই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও নূরজাহানের পদত্যাগ করা উচিত। অভিযুক্ত পিএস ও এনসিপি নেতা তানভীরকে আটক করতে হবে। ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে যারা এখন দায়িত্বে আছেন, উপদেষ্টা হয়েছেন- তাদের অনেকেই ফ্যাসিবাদের আমলে একটু শব্দ পর্যন্ত করেনি। জনগণ যেভাবে আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে, জনগণের বিরুদ্ধে গেলে সেখান থেকে টেনে নামাতেও জনগণ চিন্তা করবে না। ২৪শের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে কোনো দুর্নীতিবাজের ঠাঁই হবে না।’
তিনি আরও বলেন, গতকাল উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, তিনি যে কোনো সময় পদত্যাগ করে রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে পারেন। একজন উপদেষ্টার এমন খায়েশ থাকলে সে তো তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার রাজনৈতিক দলকে অবৈধভাবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেবে। আরেকটা বিষয় ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে উপদেষ্টা পরিষদে থাকা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম এখন আর ছাত্র প্রতিনিধি নয়। তারা এখন একটা রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি। তাই সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে এনসিপির দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ করার দাবি জানাই।
যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে তাদের থেকে জনগণের প্রত্যাশা ছিল, এই সরকার হবে জনগণের সরকার। আমরা দুর্নীতি, দুঃশাসন মুক্ত একটা বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু দেখতে পাচ্ছি এই সরকারের আমলে দুর্নীতি, তদবির বাণিজ্য ও সব প্রতিষ্ঠানে স্বজনপ্রীতি চলছে। যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দুদক চেয়ারম্যানকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তাছাড়া যেসব উপদেষ্টার এপিএসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে, সে সব উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করছি।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান বলেন, যে মন্ত্রণালয়ের পিএস কিংবা এপিএসদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে সেসব মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের পদত্যাগ করতে হবে। আর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ১৫ দিনের ভিতরে ব্যবস্থা নিতে হবে। উপদেষ্টাদের সহযোগিতায় তাদের এপিএসরা দুর্নীতিতে যুক্ত হয়েছে। বর্তমান সরকারের এমন কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই প্রধান উপদেষ্টা দায় এড়াতে পারে না।
যুব অধিকার পরিষদের মুনতাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
মন্তব্য করুন