জুলাই-আগস্টে গণহত্যার বিচার ও মৌলিক সংস্কার ছাড়া জনগণ নির্বাচন চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
রোববার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী-শ্যামপুর এলাকায় গণসংযোগ পক্ষের দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা শেষে সংক্ষিপ্ত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মাসুদ বলেছেন, গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার শেষে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি পূরণে কাজ করছে জামায়াতে ইসলামী। ফ্যাসিস্টদের বিচার নিশ্চিত না করে নির্বাচন জনগণ চায় না। যেটা জনগণ চায় না, সেটা জামায়াতে ইসলামীও চায় না। গণহত্যার বিচার ও রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার ব্যতিত নির্বাচন দিলে সেই নির্বাচনও হবে অতিতের মত পাতানো নির্বাচন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বদিচ্ছা থাকলে আগামী রমজানের আগেই গণহত্যার বিচার ও রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার শেষ করে জাতিকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলেই জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে। ছাত্র-জনতার রক্তে অর্জিত নতুন বাংলাদেশ নতুনভাবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, একাত্তরের সোনার বাংলা আজও গঠিত হয়নি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায়। ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর যেমনিভাবে সোনার মদিনা গঠিত হয়েছে একইভাবে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলেই সোনার বাংলাদেশ গঠিত হবে। সোনার বাংলা গঠনের এখনই উপযুক্ত সময় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করতে হলে ইসলামি সমাজ বিনির্মানের বিকল্প নেই। ইসলামি সমাজ বিনির্মাণে আগামী নির্বাচনে ইসলামের পক্ষে সমর্থন দিতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে জাতিকে শোষণমুক্ত বাংলাদেশ উপহার দেওয়া হবে। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও জনগণ শোষণের হাত থেকে মুক্তি পায়নি। এই জাতি ১৯৪৭ সাল থেকে শোষণের হাত থেকে মুক্তির লড়াই করলেও শোষণের হাত থেকে মুক্ত হতে পারেনি। স্বাধীন দেশের জনগণ নিজ দেশের স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকার কর্তৃক শোষণের শিকার হয়েছে। অতিতে যত সরকার ক্ষমতায় বসে সব সরকারই জনগণকে শোষণ করেছে। কারণ মানুষের তৈরি আইনে রাষ্ট্র পরিচালিত হওয়ায় জনগণকে শোষণের শিকার হতে হয়েছে। ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে জনগণ শোষিত হবে না। দেশের প্রতিটি নাগরিক দলমত, ধর্মবর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশিষে সমান অধিকার ও মর্যাদা লাভ করবে। তাই শোষণের হাত থেকে মুক্তি ও নাগরিক হিসেবে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে তিনি শান্তিকামী জনতার প্রতি আহ্বান জানান।
এর আগে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে যাত্রাবাড়ী-শ্যামপুর এলাকার ব্যবসায়ী, পথচারী, রিকশা-ভ্যান চালক ও জনসাধানের মাঝে জামায়াতে ইসলামীর দাওয়াতি উপকরণ বিতরণ করে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন থানা আমীর মুহাম্মদ যাকীর হুসাইন, নায়েবে আমীর হেলাল উদ্দিন, সেক্রেটারী নেছার উদ্দিন মাসুদ সহ স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।
এদিকে দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চলমান গণসংযোগ পক্ষের দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করেছে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সকল সাংগঠনিক থানা। দিন-রাত দলীয় নেতৃবৃন্দ পাড়া-মহল্লায় জনসাধারনের মাঝে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছিয়ে ইসলামি সমাজ প্রতিষ্ঠার সুফল তুলে ধরেন। সমাজ থেকে যাবতীয় অপকর্ম দূর করতে ইসলামি সমাজ বিনির্মাণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে নেতৃবৃন্দ ইসলামের পক্ষে সমর্থন চেয়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে একটি সুখী-সমৃদ্ধ ও বৈষম্যমুক্ত মানবিক বাংলাদেশ গড়তে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
মন্তব্য করুন