গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পালিয়ে যাওয়ার পর সারাদেশের বিভিন্ন থানায় হামলার ঘটনা ঘটলেও সেদিন থেকেই সাবেক এমপি ও মন্ত্রী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের নির্দেশে মুরাদনগর এবং বাঙ্গরা থানা ও পুলিশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিএনপি নেতাকর্মীরা।
অথচ বিএনপির যেসব নেতাকর্মী থানার নিরাপত্তা নিশ্চিতে পাহারা ও পুলিশের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন সেসব বিএনপি নেতাকর্মীরা এখন পুলিশের মামলার আসামি এবং সশরীরে উপস্থিত থেকে থানার নিরাপত্তা দেওয়া স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা বিল্লাল এখন পুলিশের মামলায় রিমান্ডে।
বিল্লাল হোসেন কুমিল্লার মুরাদনগরের ১৫নং নবীপুর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক।
গত ২৪ মার্চ মুরাদনগরের কোম্পানিগঞ্জে সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ডে অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টার চাচাতো ভাই পরিচয় দেওয়া ওবায়েদ উল্লাহ সিরিয়ালের বাইরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিতে চাইলে সেখানে কর্মরত কেরানি এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকরা বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সদর ইউনিয়নের নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ সেক্রেটারি সাজিবসহ একদল তরুণদের ডেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকদের মারধর করে এবং পুলিশ ডেকে এনে চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে থানায় নিয়ে যায় তারা।
শ্রমিক নেতাকে মুক্ত করতে থানার সামনে বিক্ষোভ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকরা। তবে থানার ভেতরে ওসির রুমের সামনে দাঁড়িয়ে মাইক হাতে শ্রমিক নেতাকে টেনে ছিড়ে ফেলার হুমকি দেন ছাত্রলীগ নেতা সাজিব।
চলমান দ্বন্দ্ব নিরসনে ওসি, এএসপি, সেনাবাহিনীসহ বিএনপি নেতারা শালিসে বসেন। রাতভর শালিসে কোনো সমাধান না হলেও সকালে শালিসে বসা বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেয় পুলিশ ও সমন্বয়ক। মামলা দায়েরের আগেই সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ডের কেরানি আবুল কালামসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে কুমিল্লা ডিবি পুলিশ।
এদিকে পুলিশের করা মামলায় সোমবার (৭ এপ্রিল) পুলিশ বিল্লালের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট ১১ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মুমিনুল হক ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ব্রেইন স্ট্রোকের রোগী বিল্লালকে রিমান্ডে নেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে অ্যাডভোকেট মহসিন বলেন, আমার আসামি বিল্লাল হোসেন অসুস্থ। সে ব্রেইন স্ট্রোক করেছে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার পর তার কোনো কিছু হলে পুলিশকে সম্পূর্ণ দায়ভার নিতে হবে।
স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অভিযোগ- পুলিশ কর্তৃক মামলা দায়েরের আগে ও পরে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের নানানভাবে হয়রানি ও গ্রেপ্তার করছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে-পরেও কুমিল্লা ও ঢাকার ডিবি পুলিশ আসামি গ্রেপ্তারের নামে বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে। এতে সাধারণ মানুষও আতঙ্কিত। অবিলম্বে হয়রানি বন্ধ না হলে মুরাদনগরের আপামর জনতা পুলিশের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠবে বলে কেউ কেউ বলেন।
মন্তব্য করুন