গাজায় ইসরায়েলি সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচি পালনে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
রোববার (৬ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এক বিবৃতিতেে এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেছেন, পশ্চিমা দেশসমূহ, বিশেষ করে আমেরিকার প্রত্যক্ষ মদদে দখলদার ইসরায়েল সরকার গাজায় নির্বিচার গণহত্যায় মেতে উঠেছে। সন্ত্রাসীদের বোমার আঘাতে শুকনো পাতার ন্যায় মানুষের ক্ষতবিক্ষত দেহাংশ উড়ছে। নবজাতক, নারী-শিশু, বৃদ্ধ প্রতিমুহূর্তে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। মানবিক সহায়তা দিতে আসা সমাজ ও স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীও রেহাই পাচ্ছে না তাদের বর্বরতা থেকে। কোলাহলপূর্ণ গাজা উপত্যকা এখন শুধুই জনমানবহীন বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে। অসভ্য ও অমানবিকতার নির্মম শিকার গাজাবাসী যেন অভিভাবকশূন্য।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের ৩ এপ্রিল পর্যন্ত গাজায় শহীদ হয়েছেন কমপক্ষে ৫০ হাজার ৫২৩ জন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৪ হাজার ৭৭৬ জন নিরীহ মানুষ। গাজাবাসীর মধ্যে ৯০ শতাংশই বাস্তুচ্যুত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ইউনিসেফ জানিয়েছে, যুদ্ধ পুনরায় শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০০ শিশু নিহত বা আহত হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, বিশ্বমানচিত্র থেকে মুসলমানদের পবিত্রতম ভূমির বিলীন হয়ে যাওয়ার নির্মম দৃশ্য দেখেও বিশ্ববিবেক আজ নির্বিকার। বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বের শক্তিধর দেশসমূহ ইসরায়েলের বর্বরতা দেখেও মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে। মুসলিম রাষ্ট্রসমূহের নির্লিপ্ততাই ইসরায়েলকে গণহত্যায় উৎসাহিত করছে। জাতিসংঘ, ওআইসির ও আরব লীগের মত সংগঠন তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ দখলদার ইসরায়েল বাহিনীর গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে আহুত ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়ে সোমবার (৭ এপ্রিল) সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও সারাদেশে অফিস আদালত বন্ধ রাখার জন্য বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি ইসরায়েলের বর্বরতার প্রতিবাদ জানিয়ে চলমান গণহত্যা বন্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিবৃতি প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতিও বিশেষভাবে আহ্বান জানান।
মন্তব্য করুন