‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে ভারতে অবস্থান নিয়েছে। সেখান থেকে গুজব ছড়াচ্ছে, উসকানি দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে নয়, তারা চাইলে ভারতে রাজনীতি করতে পারে। কারণ তারা বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। বাংলাদেশে তাদের আর রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।’
শনিবার (২২ মার্চ) গণঅধিকার পরিষদ গোপালগঞ্জ জেলার উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে এসব কথা বলেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবু হানিফ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সব রাজনৈতিক দল যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, সেই ঐক্য এখন আর নেই। নিজেদের চাওয়া-পাওয়ার হিসাব মেলাতে গিয়ে বিভক্ত হয়ে গেছি আমরা। আমাদের এই বিভক্তি চলমান থাকলে পরাজিত শক্তি সেই সুযোগ নিতে পারে।
যেকোনো মূল্যে আমাদের ঐক্য ধরে রাখতে হবে এবং জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময়ের সেই ঐক্য ফিরিয়ে আনতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে সবার মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে। বাংলাদেশের যেকোনো সংকটে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও সেনাবাহিনী মানুষের পক্ষে ছিল। সেনাবাহিনীর দুয়েকজন ভিন্ন ভূমিকা নিতে পারে কিন্তু সামগ্রিকভাবে সেনাবাহিনী জনগণের পক্ষে ছিল। বর্তমানে একটা গোষ্ঠী দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে জনগণের বিপক্ষে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। এটা ভয়ংকর ফাঁদ, এ ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না।
হানিফ বলেন, অনেকেই নানাভাবে গুজব ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগ চলে আসবে, তাদের বলব আপনারা দিবাস্বপ্ন দেখছেন, সেই স্বপ্ন কোনো দিন পূরণ হবে না। আওয়ামী লীগ ফিরে আসার কোনো সম্ভাবনা থাকলে তারা দেশ থেকে পালাত না। আওয়ামী লীগ ক্লিনিক্যালি ডেড, জীবিত হওয়ার সুযোগ নেই। সুতরাং আওয়ামী লীগ আর ফিরতে পারবে না।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা চালিয়েছিল, তার বিচার হবে, তারপর দেখা যাবে আওয়ামী লীগের অবশিষ্ট কী থাকে, এমনটা উল্লেখ করে আবু হানিফ বলেন, কিছুদিন আগে জাতিসংঘের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দিয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন, তারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন। সেই অপরাধের বিচারের সুপারিশ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা অপরাধী, তাদের বিচার হবে। দল হিসেবে আওয়ামী লীগেরও বিচার হতে হবে। গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
ইফতার মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন গণঅধিকার পরিষদ গোপালগঞ্জ জেলার সভাপতি আল আমিন সরদার। সঞ্চালনা করেন গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ মুজাহিদ শেখ।
আরও বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদ গোপালগঞ্জ জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাআদ শিকদার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ গোপালগঞ্জ জেলার সভাপতি তসলিম হোসাইন শিকদার, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের জেলা সেক্রেটারি আল আসুদ খান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল দল গোপালগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান পলাশ, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি জসিম উদ্দিন, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্র অধিকার পরিষদের সহ সভাপতি আরিফুল ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদ কাশিয়ানী উপজেলার সদস্য সচিব ডা. আহমেদ আলী, গণঅধিকার পরিষদ মুকসুদপুর উপজেলার যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আলী, গণঅধিকার পরিষদ টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সভাপতি ডা. সাহেদ আলম, বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মো. মুনায়েম প্রমুখ।
মন্তব্য করুন