দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিএনপিসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তারা বলেছেন, একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের জন্য এখন জাতীয় ঐক্যই হবে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।
বুধবার (১৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সম্মানে বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে নেতারা এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে আমরা অত্যন্ত কঠিন সময় অতিক্রম করছি। দীর্ঘদিন পরে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশ পেলেও এখনো গণতন্ত্রের পথের দিশা খুঁজে পাচ্ছি না। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশই বাংলাদেশের মূল আকাঙ্ক্ষা।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন হয়েছে। সংস্কার প্রস্তাবগুলো রাজনৈতিক দলের কাছে পৌঁছে গেছে। আপনারা নিশ্চয় তা গভীরভাবে পর্যালোচনা করবেন, দেখবেন, পরীক্ষা করবেন। বাংলাদেশের মানুষের জাতীয় ইতিহাস, তার কৃষ্টি, ঐতিহ্য, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ সব কিছুকে নিয়ে যেন আমরা সামনের দিকে এগোতে পারি-এটাই হওয়া উচিত আমাদের সকলের লক্ষ্য।
আজকে বিভিন্ন রকম কথাবার্তা বিভিন্ন মিডিয়ায় চলে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন কথা উঠছে। আমাদের মধ্যে বিভিন্ন রকম বিভ্রান্তি ছড়ানো শুরু করেছে। গণতন্ত্রের পথে যাওয়া ছাড়া আমাদের কোনো বিকল্প নেই। সেজন্য আমরা বার বার দ্রুত নির্বাচনের কথা বলেছি। ন্যূনতম সংস্কার করে যেন আমরা একটা জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক পার্লামেন্ট, জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক একটা সরকার গঠন করতে পারি- যারা সেখানে নির্ধারিত করবেন পরবর্তী সংস্কারগুলো কীভাবে হবে, কীরূপে হবে।
ঐক্যে জোর দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই মুহূর্তে ঐক্য অত্যন্ত প্রয়োজন। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাগুলোর নিরসন করতে হবে। বিএনপি আগামীতে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে দলের ৩১ দফা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
এলডিপির প্রেসিডেন্ট অলি আহমদ বলেন, আমাদের একটা জিনিস অনুধাবন করতে হবে যে, দেশটা আমাদের। ভারতের দালালি করে কোনো লাভ হবে না। আমরা বহুদিন দালালি করেছি, বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই বলব, নিজের পায়ে দাঁড়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে যদি আমরা এগোই, আমরা আর কখনো স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারবো না। তারেক রহমানসহ তরুণ নেতৃত্ব যদি অভিজ্ঞতাকে নিয়ে এগোতে পারে, তাহলে এদেশে আর পেছনের দিকে ফিরে তাকাতে হবে না।
জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের জন্য এখন জাতীয় ঐক্যই হবে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। এই লক্ষ্য রেখেই যার যার জায়গা থেকে আমাদেরকে চারটি বিষয়ে এক থাকতে হবে।
এক. বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব, এতে কোনো আপস নেই। দুই. একটি টেকসই গণতন্ত্র। তিন. একটি ফেয়ার ইলেকশন এবং চার দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ। এভাবে আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থেকে সমাজ তৈরি করতে পারি, ইনশাল্লাহ কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, এদেশে পতিত স্বৈরাচার, পতিত লুটেরা আর কখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সুযোগ পাবে না, সাহস পাবে না।
ইফতার মাহফিলে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মন্তব্য করুন