ছাত্রদল নেতাকে কুপিয়ে তার হাত ও পায়ের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগে বরিশাল দক্ষিণ জেলার নিয়ামতি ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীন ফরাজীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
রোববার (৯ মার্চ) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, বরিশাল দক্ষিণ জেলার নিয়ামতি ইউনিয়নের বাকেরগঞ্জে শাহীন ফরাজীর বিরুদ্ধে মো. আসাদুল্লাহ নামে এক ছাত্রদল নেতাকে কুপিয়ে তার হাত ও পায়ের রগ কেটে দেওয়ার মতো সহিংস ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। সুতরাং দলের গঠনতন্ত্রের বিধান মোতাবেক শাহীন ফরাজীকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে নির্দেশক্রমে বহিষ্কার করা হলো। এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য, শনিবার (০৮ মার্চ) রাত ৯টার দিকে উপজেলার নিয়ামতি বাজারের ভিআইপি মিষ্টির দোকানের সামনে রগ কেটে দেওয়ার এ ঘটনা ঘটে। আহত মো. আসাদুল্লাহ নিয়ামতি ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি। এ ঘটনায় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ ওঠা বিএনপি নেতারা হলেন- নিয়ামতি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক সালাম মৃধা ও যুগ্ম আহ্বায়ক শাহিন ফরাজী।
জানা গেছে, পূর্ববিরোধকে কেন্দ্র করে শনিবার রাতে স্থানীয় নিয়ামতি বাজার এলাকায় প্রতিপক্ষ বিএনপি নেতা সালাম মৃধা ও শাহিন ফরাজীর নেতৃত্বে একদল যুবক প্রকাশ্যে কুপিয়ে আসাদুল্লাহকে ফেলে রেখে যায়। খবর পেয়ে বাকেরগঞ্জ থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিয়ামতি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীন ফরাজীর সঙ্গে ছাত্রদল নেতা আসাদুল্লাহর দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছিল। প্রতিপক্ষের মামলায় ছাত্রদল নেতা আসাদুল্লাহ ইতোপূর্বে কারাভোগও করেছেন। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তন হলে স্থানীয়ভাবে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ আরও প্রকট আকার ধারণ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১০টার দিকে আসাদুল্লাহ বাজারে অবস্থান করছিলেন, এমন সময় নিয়ামতি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক সালাম মৃধা এবং যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীন ফরাজীর নেতৃত্বে একদল যুবক এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায়। আত্মরক্ষা করতে গেলে তাকে রাস্তার ওপর ফেলেও কোপানো হয়। এক পার্যায়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হামলাকারীরা চলে যায়। এ পুরো ঘটনাটি বাজারে উপস্থিত অসংখ্য মানুষ প্রত্যক্ষ করলেও ভয়ে তাকে উদ্ধার করতে কেউ সামনে আসেনি।
আহত ছাত্রদল নেতার স্বজনরা জানান, সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি কোপে আসাদুল্লাহর হাত এবং পায়ের রগ কেটে গেছে।
নিয়ামতি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক সালাম মৃধা এবং যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীন ফরাজীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। হামলার ঘটনার পর থেকে তারা আত্মগোপনে রয়েছেন।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ নিয়ে ছাত্রদল নেতাকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে পাঠাই। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ব বিরোধের জেরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন