কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২৫, ০৮:২৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

পিআর পদ্ধতিতে দ্রুত নির্বাচনের দাবি চরমোনাই পীরের

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ইফতার মাহফিলে অতিথিরা। ছবি : কালবেলা
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ইফতার মাহফিলে অতিথিরা। ছবি : কালবেলা

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, সংবিধান, নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন, পুলিশ, দুদক ও বিচার বিভাগের সংস্কার জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার না হলে আগের তিমিরে ফেরত যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যাবে। তাই এসব ক্ষেত্রে সংস্কার হতেই হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের ক্ষেত্রে আমরা বিশ্বের নব্বইটিরও বেশি দেশে অনুসৃত সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির পিআর (পিআর) নির্বাচন পদ্ধতি দাবি করছি। আমরা মনে করি জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হলে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আসবে এবং কার্যকর ও যথাযথ প্রতিনিধিত্বশীল পার্লামেন্ট গঠিত হবে। নির্বাচনে কালো টাকা ও পেশি শক্তির ব্যবহার বন্ধ হবে।

শুক্রবার (০৭ মার্চ) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে রাজনীতিবিদ, কূটনৈতিক, সাংবাদিক, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সন্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নির্বাচনহীন পরিস্থিতি দীর্ঘ হোক তা চায় না। বরং নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ করতে এবং নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।

চরমোনাই পীর বলেন, ২০২৪ সাল আমাদের ইতিহাসের একটি গৌরবময় ইতিহাস। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জুলাইয়ের শুরু থেকেই রাজনৈতিকভাবে স্বনামেই এই আন্দোলনের অংশ ছিল। দীর্ঘ স্বৈরশাসনের পরে একটি গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রাহুমুক্ত হয়েছে। এখন সময় হলো বাংলাদেশ গড়ার।

তিনি বলেন, আমরা দেশের রাজনৈতিক চরিত্র পরিবর্তন করে সৌহার্দ্য ও সহযোগিতাপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ নির্মাণ করতে চাই। দুর্নীতিমুক্ত জনবান্ধব জনপ্রশাসন, স্বাধীন বিচার বিভাগ ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বয়ংক্রিয় ও দক্ষ করে তোলার জন্য আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয়ে বলেন, ইসলামে প্রতিবেশীকে সম্মান করা এবং প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেওয়ার ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে নির্দেশনার আলোকে আমাদের রাষ্ট্রীয় প্রতিবেশীকে সম্মান করার এবং বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে তাদের কোনো ক্ষতি না করতে দেওয়ার ব্যাপারে আমরা বদ্ধপরিকর। একইসঙ্গে রোহিঙ্গা ও ফিলিস্তিনসহ বিশ্বের সব মাজলুমের ব্যাপারে আমরা সহমর্মিতা জানাচ্ছি এবং তাদের স্বাধীকারের আন্দোলনের সমর্থন ঘোষণা করছি।

চরমোনাই পীর বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের আমলে অপরাধীদের যথাযথ বিচার নিশ্চিত করতে হবে। কারণ তাদের বিচার না হলে মানুষের রক্তের দায় জাতীকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম তাড়া করবে। তাই যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের বিচার দ্রুত করতে হবে। তবে সতর্ক থাকতে হবে, কোনো নিরাপরাধ যেন কষ্ট না পায় আর কোনো অপরাধী যেন ছাড় না পায়।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ একটি সুখি-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণ করার চেষ্টা করছে যেখানে দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও দুর্নীতি থাকবে না। যেখানে মানবাধিকার সুরক্ষিত হবে,পরমত সহিষ্ণুতা ও ধর্মীয় সহ-অবস্থান নিশ্চিত হবে। নাগরিকের স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ মৌলিক অধিকারকে প্রধান্য দিয়ে ব্যবসা ও পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশ নির্মাণই আমাদের রাজনৈতিক প্রচেষ্টার কেন্দ্র।

ইফতার মাহফিলে আরও অংশ নেন- জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর আব্দুল মইন খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ বুলু, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ, মহাসচিব ড. আহমাদ আব্দুল কাদের, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির মহাসচিব ব্যারিষ্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসেন রাজী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, গণঅধিকার পরিষদের রাশেদ খান, ফারুক আহমেদ প্রমুখ।

এছাড়াও সুইজারল্যান্ড, ইউএসএ, চীন, নেদারল্যান্ডসের হেড অব মিশন আন্দ্রে কার্টসটেনস, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, আফগানিস্তান, ইরান,ভুটান ও কসোভ কূটনৈতিক মিশনের প্রধান ও প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

দৈনিক খবরের কাগজের সম্পাদ মোস্তাফা কামাল, ইনকিলাবের সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দিনসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার শীর্ষ সাংবাদিকরাও ইফতার মাহফিলে অংশ নেন।

ইসলামী আন্দোলনের সদস্য মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ মাদানী, নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল হক আজাদ, মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমেদ, যুগ্মমহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, আহমদ আব্দুল কাইয়ুম, মুফতি ইসহাক মো. আবুল খায়ের, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নেছার উদ্দিন, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শেখ ফজলুল করিম মারুফসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইউসুফ আহমেদ মানসুর, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আতিকুর রহমান মুজাহিদসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ফাইভ-জি গতিতে তারাবি না পড়ার আহ্বান আজহারির

ঈদে বাজারে আসছে না নতুন নোট 

কেম্যান দ্বীপপুঞ্জসহ পাঁচ দেশে হাসিনার পরিবারের নামে সম্পদের খোঁজ

হাতের ইশারাতেই কোরআন শিখছে শিশুরা

নারায়ণগঞ্জে ১৭ লাখ টাকার গার্মেন্টস পণ্য ছিনতাই    

নতুন করে কী হচ্ছে সিরিয়ায়?

ইউআইইউ ‘ইনভেনশিয়াস ৪.১’ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন 

বগুড়ায় নির্যাতনে স্ত্রীর মৃত্যু, স্বামী আটক

‘শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পরোক্ষ ধূমপান কমাবে’

যানবাহন চলাচলে ডিএমপি’র নতুন নির্দেশনা

১০

‘ধর্ষিতার আগে ধর্ষকের জানাজার ব্যবস্থা করতে হবে’

১১

সরকার পতনের পরও থামেনি আমিরুলের মাদক ব্যবসা

১২

বাংলাদেশের অবস্থা ছিল গাজার মতো : গার্ডিয়ানকে ড. ইউনূস

১৩

যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানি নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, যা জানা যাচ্ছে

১৪

ধর্ষণবিরোধী স্লোগানে উত্তাল এফডিসি

১৫

‘বিএসইসির ঘটনায় সব কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত নন’

১৬

পাচারের সময় ১৫টি সোনার বারসহ আটক এক

১৭

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি ছাত্রদলের

১৮

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী

১৯

ছেলের সেমিস্টারের খরচ ৪০০ কোটি পাঠালেন বাংলাদেশি বাবা

২০
X