একটা উছিলা ধরে জাতির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, দেশের বাইরে এবং ভেতরে থেকে এক শ্রেণির লোক বিএনপির সঙ্গে আলেম-ওলামাদের দূরত্ব-বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
রোববার (০২ মার্চ) রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে প্রথম রোজায় এতিম-ওলামা-মাশায়েখদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন।
ইফতার মাহফিলে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ইফতারের প্রাক্কালে বাংলাদেশ শান্তি-সমৃদ্ধশালী হতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রহমত কামনা করে সকলকে দোয়া করার অনুরোধ জানান তিনি।
তারেক রহমান বলেন, রমজান আমাদের শেখায় আমরা কীভাবে সংযমী ও ধৈর্যশীল হতে পারি, একইসঙ্গে শেখায় আমরা কীভাবে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।
এ সময় আলেম-ওলামাদের কাছে অনুরোধ রেখে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, খ্রিস্টান সম্প্রদায় সারা বিশ্বে তাদের বড়দিন একই দিনে পালন করে। এখানে উপস্থিত এবং সারা দেশের ওলামা-মাশায়েখগণকে অনুরোধ করব- আমরা চিন্তা করে, আলোচনা করে দেখতে পারি কিনা- সারা বিশ্বের মানুষের সঙ্গে আমরা বাংলাদেশের মানুষ একই দিনে একসঙ্গে রোজা এবং ঈদ পালন করতে পারি কিনা। বিজ্ঞানের যুগে এটা করা সম্ভব কিনা, কোনো উপায় আছে কিনা- এই বিষয়টি চিন্তা করার জন্য আমি আপনাদের অনুরোধ করব।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, পবিত্র রমজান কিন্তু সবার ভাগ্যে জোটে না। পবিত্র গ্রন্থে লেখা আছে- সৌভাগ্যবান তারাই যারা এই পবিত্র রমজান পায়। রমজানের অনেকগুলো মৌলিক বিষয় রয়েছে- সদা সত্য কথা বলা, সত্যের পথে থাকা, নিরপেক্ষ থাকা এবং মানুষের পক্ষে কাজ করা।
মির্জা আব্বাস বলেন, দেশের বাইরে এবং ভেতরে থেকে এক শ্রেণির লোক বিএনপির সঙ্গে আলেম-ওলামাদের দূরত্ব-বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এই বিভেদ কিন্তু বিএনপির সঙ্গে ওলামা-মাশায়েখদের নয়; এই বিভেদ সৃষ্টির মাধ্যমে যে ফাটল সৃষ্টি হবে, এই ফাটল দিয়ে কিন্তু বিদেশি শক্তি প্রবেশ করবে। দেশটাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করবে।
বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী প্ল্যাটফর্মের নতুন রাজনৈতিক দল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন নতুন দল এসেছে। আমি কিন্তু তাদের স্লোগান বুঝি না। আমি বুঝি নাই যে, কাকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে। আমি এখনো বুঝি নাই, সেকেন্ড রিপাবলিক কী? আপনারা বুঝেছেন কিনা জানি না। অর্থাৎ একটা উছিলা ধরে জাতির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। দয়া করে খেয়াল রাখবেন।
কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে বিএনপির এই নীতি-নির্ধারক বলেন, আপনাদের (আলেম-ওলামা) মতো এ রকমই পোশাক পরা এক শ্রেণি তাদের বাতাস দিয়ে যাচ্ছে। দয়া করে আপনারা ওদের একটু সামাল দেবেন।
তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে এই দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।
ইফতারে ফার্মগেট ইসলামিয়া মিশন মাদ্রাসা এবং শান্তিনগর বাজার জাতীয় মুসলিম মাদ্রাসার শতাধিক শিশু শিক্ষার্থী অংশ নেয়। ওলামা-মাশায়েখদের মধ্যে ছিলেন সুবহানবাগ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ, ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ মসজিদের খতিব মুফতি মহিউদ্দিন, জাতীয় ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা কাজী আবু হোরায়রা ও মিরেশ্বরাই দরবার শরীফের পীর মাওলানা আব্দুল মোমেন নাছেরী।
এ ছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল বারী ড্যানি, অমলেন্দু দাস অপু, জন গোমেজ, নির্বাহী কমিটির সদস্য মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক, জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের আহ্বায়ক কাজী মো. সেলিম রেজা, সদস্য সচিব কাজী মোহাম্মদ আবুল হোসেন, সাবেক সদস্য সচিব মাওলানা মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার প্রমুখ ছিলেন।
মন্তব্য করুন