জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল সংলগ্ন মাঠে কাল বৃহস্পতিবার সকালে বসতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত বিএনপির বর্ধিত সভা। অনুষ্ঠানটির যাবতীয় প্রস্তুতি কাজ রাতের মধ্যেই শেষ হবে। সকাল ১০টায় এই বর্ধিত সভা শুরু হবে। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সভাপতিত্ব করবেন। উদ্বোধনী ও সমাপনী পর্বে নেতাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখবেন তিনি।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও বর্ধিত সভা বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক রুহুল কবির রিজভী নেতাকর্মীদের নিয়ে বর্ধিত সভার কাজকর্ম পরিদর্শন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘প্রথম বাংলাদেশ আমাদের শেষ বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হবে। এই প্রমাণ্যচিত্র তৈরি করেছে ‘বর্ধিত সভা বাস্তবায়ন মিডিয়া উপকমিটি’। এ ছাড়া বর্ধিত সভা উপলক্ষে আমরা বিএনপি পরিবার ‘আস্থা’ নামে একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করেছে। এরপরে রুদ্ধদ্বার কর্ম অধিবেশন, যেখানে তৃণমূলের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য দেবেন। পরে সমাপনীতে তারেক রহমান নীতিনির্ধারণী বক্তব্য দেবেন।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ‘লো মেরিডিয়ানে’ বর্ধিত কমিটির সভা হয় যেখানে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বক্তব্য দেন। এর চারদিন পর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ৮ ফেব্রুয়ারি জেলে যান বিএনপি চেয়ারপারসন।
জানা গেছে, তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত ছয় স্তরের সাড়ে তিন হাজারের বেশি নেতৃবৃন্দ এই বর্ধিত সভায় অংশ নিচ্ছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতর জানায়, দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সদস্য, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সকল কর্মকর্তা ও সদস্যগণ, সকল মহানগর, জেলা, থানা-উপজেলা-পৌর কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবগণ রয়েছেন। বিএনপির ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবগণ রয়েছেন। ২০১৮ সালের একাদশ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী এবং মনোনয়ন ইচ্ছুক যে-সব প্রার্থী প্রাথমিক পত্র পেয়েছিলেন তারাও এই সভায় থাকছেন। আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য সকালের নাস্তা, দুপুরে খাবার, বিকালে স্ন্যাকসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত থাকবে চা-কফির ব্যবস্থা।
রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের বর্ধিত সভার প্রস্তুতি কাজ পুরোদমে চলছে। রাতের মধ্যে আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। আগামীকাল সকাল ১০টায় এই সভায় শুরু হবে। আমাদের প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। আমন্ত্রিত নেতৃবৃন্দ যারা আসবেন তাদের খাওয়া-দাওয়া, ডাইনিং, স্যানিটেশন, চিকিৎসা সেবা প্রভৃতি বিষয়ে আমাদের যারা দায়িত্বে আছেন তারা তদারকি করছেন। মেডিক্যাল থাকবে যেখানে সার্বক্ষণিক তিনটি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত থাকবে। একটি ফিল্ড হাসপাতাল থাকবে যেখানে কিছু বেড থাকবে জরুরি চিকিৎসা সেবা দেবার জন্য। বর্ধিত সভায় থেকে কি বার্তা আসতে পারে জানতেই চাইলে রিজভী বলেন, যে সমস্ত নেতৃবৃন্দ বর্ধিত সভায় আসবেন, যাদেরকে ডাকা হয়েছে তাদের বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করেই … কী চান তারা? তারা অনেকদিন ধরেই আমাদের এত বড় আন্দোলন গেলো, আরও নানা বিষয় আছে… কী ধরনের প্রস্তাব গ্রহণ করা যায় তাদের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সেটা আসবে।
ব্যবস্থাপনা উপকমিটির আহ্বায়ক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, আজকে রাতের মধ্যে আমাদের বর্ধিত সভার কাজ শেষ হয়ে যাবে। বলতে পারেন, রাতে প্রস্তুত হয়ে যাবে অনুষ্ঠানের সব আয়োজন। সেই ভাবেই আমাদের কাজ পুরোদমে চলছে। মঞ্চ নির্মাণ হয়ে গেছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন সেজন্য ইলেক্ট্রনিক সব পর্দার নির্মাণ কাজও শেষ পর্যায়।
এ সময়ে উপস্থিত দলের কেন্দ্রীয় নেতা হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ডা. রফিকুল ইসলাম, মীর সরাফত আলী সপু, শরীফুল আলম, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, তাইফুল ইসলাম টিপু, আমিরুল ইসলাম আলিম, মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, আতিকুর রহমান রুমন, বেবী নাজনীন, তানভীর আহমেদ রবিনসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বর্ধিত সভা সুশৃঙ্খল ও সফলভাবে অনুষ্ঠানের জন্য ৬টি উপকমিটি করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ব্যবস্থাপনা কমিটি (আহ্বায়ক-শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি), অভ্যর্থনা কমিটি (আহ্বায়ক হাবিব উন-নবী খান সোহেল), আপ্যায়ন কমিটি (আহ্বায়ক এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত), শৃঙ্খলা কমিটি (আহ্বায়ক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু), মিডিয়া কমিটি (আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল) এবং চিকিৎসাসেবা কমিটি (আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম)। কেন্দ্রীয় দফতর জানায়, আমন্ত্রিত অতিথিরা নয়াপল্টনের কার্যালয় থেকে ছবিযুক্ত আইডি কার্ডও নিয়ে গেছেন অধিকাংশই। গণমাধ্যম ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জন্য আলাদা করে কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন