বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের কাছে এ আহ্বান জানাতে চাই, আপনি শক্ত হাতে সরকারকে পরিচালিত করুন। এ কথা কেউ যেন না বলে, আপনি পক্ষপাতিত্ব করছেন।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রমনায় আইইবি মিলনায়তনে পিলখানায় শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, কিছু মানুষ অন্যায়ভাবে জনগণকে বিক্ষুব্ধ করে দেশকে নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন রকম প্রশ্ন তুলে একটা নৈরাজ্যের দিকে দেশকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের কাছে এই আহ্বান জানাতে চাই, আপনি শক্ত হাতে সরকারকে পরিচালিত করুন। এ কথা কেউ যেন না বলে, আপনি পক্ষপাতিত্ব করছেন। সেটা আমি শুনতে চাই না। কারণ আপনি প্রতিষ্ঠিত একজন বিখ্যাত মানুষ, সারা বিশ্বে আপনার নাম আছে। সেটা রাখবেন আপনি, সেটাই আমরা আশা করি আপনার কাছ থেকে।
ফখরুল বলেন, আমরা আশা করব, সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার যেটা ন্যূনতম প্রয়োজন, সেটাকে সম্পন্ন করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যান এবং সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশের স্থিতিশীলতা, শান্তি ও ভবিষ্যতের জন্য সমৃদ্ধি আনবেন। এটাই আমি আপনাদের কাছে প্রত্যাশা করি।
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করে তর্ক বন্ধ করে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকুন, যেন ঐক্যবদ্ধ থাকার মধ্য দিয়ে আমরা একটা গণতান্ত্রিক জায়গায় পৌঁছাতে পারি। আজ আমাদের বাংলাদেশে যে পরিবর্তন হয়েছে, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং নতুন একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তুলবার।
তিনি বলেন, সেই সুযোগকে আজ আবার ধ্বংস করে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। শেখ হাসিনা আশ্রয় নিয়েছেন দিল্লিতে। সেখান থেকে তিনি চক্রান্ত করছেন, পরিকল্পনা করছেন কী করে এই গণঅভ্যুত্থানের বিজয়ের সব ফলাফলকে নস্যাৎ করে দেওয়া যায়। সেখান থেকে চক্রান্ত করছেন বাংলাদেশে কী করে আবার নৈরাজ্য সৃষ্টি করা যায়, একটা অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করা যায়। তারই চক্রান্ত হিসেবে আমরা দেখছি আজ বিভিন্নভাবে বিভিন্ন পক্ষ থেকে একটা অস্থির অবস্থা সৃষ্টি করা হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আসা একটি সরকার। প্রায় দুই হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দিয়ে সরকার গঠিত হয়েছে। আমাদের প্রত্যেকের আশা, এই সরকার জনগণের আশা পূরণ করবে। আমরা বারবার করে এ কথা বলে আসছি, যে দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা না করলে কোনোমতেই আমরা একটি স্থিতিশীল অবস্থা পাব না। সেই প্রথম থেকেই বলে আসছি, প্রকৃতপক্ষে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটার জন্যই আমাদের আন্দোলন করেছি দীর্ঘদিন ধরে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আজ সেই জায়গায় বিভিন্ন রকম প্রশ্ন তুলে একটা নৈরাজ্যের দিকে দেশকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিছু সংখ্যক মানুষ অন্যায়ভাবে দেশকে, দেশের মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তোলার চেষ্টা করছেন। বিভিন্নভাবে সবাইকে রাস্তায় নিয়ে জড়ো করার চেষ্টা করছেন এবং দেশে একটা নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। এটা কোনোভাবেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য শুভ নয়। এটা কোনভাবেই বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য, স্থিতিশীলতার জন্য শুভ নয়।
মন্তব্য করুন