বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন বলেছেন, দেশে গত প্রায় দেড় যুগে হাজার হাজার গুম-খুন হয়েছে, ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। এসবের সঙ্গে জড়িতদের বিচার করতে হবে।
তিনি দাবি করেন, প্রশাসনে পতিত ফ্যাসিবাদের দোসরদের সরিয়ে দেশপ্রেমিক কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিতে হবে। এটা জনগণের প্রত্যাশা।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নিউমার্কেটে থানা বিএনপির উদ্যোগে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক এক কর্মশালায় ড. মাহদী এসব কথা বলেন।
বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম বলেন, সংস্কারের অগ্রনায়ক সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়া; তার হাতেই একদলীয় বাকশাল থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের এবং ৪টি সংবাদপত্রের পরিবর্তে অসংখ্য গণমাধ্যমের সূচনা হয়। একইভাবে বেগম খালেদা জিয়ার হাত ধরে বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু হয়েছিলো।
তিনি বলেন, বাস্তবতার নিরিখে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফা দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া এবং রূপসা থেকে পাটুরিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত জনপদের সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শেখ রবিউল আলম রবি বলেন, আওয়ামী লীগ সংবিধানকে অপব্যবহার করেছে দলীয় সংকীর্ণ স্বার্থে। তারা সংবিধান সংশোধন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছে, লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে।
বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, বিএনপি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য লড়াই করেছে। হাসিনা এই লড়াইকে রক্তাক্ত করেছে। যার ফলে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে এবং হাসিনা পালিয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, মুক্ত পরিবেশে আবারো ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। জনগণের ইচ্ছাকে মূল্য দিচ্ছে না কেউ কেউ। জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে কোনো রকম স্থানীয় নির্বাচন প্রত্যাশিত নয়।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক রফিকুল আলম মজনু বলেন, গত প্রায় দেড় যুগে খুনি হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বিএনপি সেই ধ্বংসপ্রাপ্ত রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক কাঠামোকে দৃঢ় করার জন্য ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবনা দিয়েছে।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা নিজের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার কূট ভাবনাতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছিল।
সঞ্চালকের বক্তব্যে দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন বলেন, অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির ঐক্য আজ বড় প্রয়োজন। নিজেদের দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের প্রয়োজনের কথা ভাবতে হবে।
কর্মশালায় ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি উপস্থাপন ও বিশ্লেষণ করেন ব্যারিস্টার অসীম, শেখ রবি, মাহদী আমিন ও ইশরাক হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন উর রশীদ হারুন, লিটন মাহমুদ, আব্দুস সাত্তার, হাজি মনির হোসেন চেয়ারম্যান, অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন সরদার, মজিবুর রহমান মজুসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
মন্তব্য করুন