ছাত্র অধিকার পরিষদের জন্ম না হলে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান হতো কিনা সন্দেহ আছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কিশোরগঞ্জের মুক্তমঞ্চে ছাত্র অধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আবু হানিফ বলেন, এই সরকারের ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির তেমন উন্নতি করতে পারেনি। অনেক দেরিতে হলেও যৌথবাহিনী অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট’ শুরু করেছে। অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট’কে বিতর্কিত করার জন্য একটি গোষ্ঠী তাদের পারিবারিক বা রাজনৈতিক আক্রোশকে ব্যবহার করে অনেক নিরীহ মানুষকেও ফাঁসিয়ে দিচ্ছে ও বাণিজ্য শুরু করেছে। আমরা শুনেছি এই বাণিজ্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় হচ্ছে, এমনকি কিশোরগঞ্জেও হচ্ছে। অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরুর ১০ দিন অতিবাহিত হলেও কোনো রাঘববোয়ালদের আটক করতে পারেনি, যাদের আটক করেছে সবাই চুনোপুঁটি। এই অপারেশনের গতি আরও বাড়াতে হবে। যেসব রাঘববোয়াল অবৈধ অর্থ খরচ করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে, তাদের শিকার করতে হবে। তা না হলে এই অপারেশন ডেভিল হান্ট সফলতার মুখ দেখবে না।
আবু হানিফ তার বক্তব্যে আরও বলেন, আজকে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ৭ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল এই সংগঠনটি। গত ৭ বছরে ফ্যাসিবাদের লড়াই জারি রেখেছিল। এই ছাত্র সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী হামলা, মামলা, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছে। সব শেষ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা অধিকাংশ তরুণ এই ছাত্র অধিকার পরিষদের বর্তমান নেতা কিংবা সাবেক নেতা ছিল। ২০১৮ সালে ছাত্র অধিকার পরিষদের জন্ম না হলে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান হতো না। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি রচনা করার জন্য বিগত সময়ে কাজ করেছে এই ছাত্র অধিকার পরিষদ।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘ যে প্রতিবেদন দিয়েছে, সে প্রতিবেদন গণহত্যার বিচারে সহযোগিতা করবে। কিন্তু ৬ মাস হয়ে গেলেও এখনো বিচারের তেমন অগ্রগতি নেই। ইতোমধ্যে অনেকেই নির্বাচনের জন্য তাড়াহুড়ো শুরু করেছে। জুলাই গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করার আগে কোনো নির্বাচন জনগণ মেনে নিবে না। তাই গণহত্যার বিচারের বিষয়ে সরকারকে আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে।
আবু হানিফ তার বক্তব্যে আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনের ৬ মাস পার হয়েছে। এখনই আন্দোলনের ক্রেডিট নিয়ে নিজেদের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ শক্তির যেকোনো বিভাজনের ফলে পরাশক্তি সুযোগ নিতে পারি। এমন কিছু করা যাবে না, যাতে সেই পরাজিত শক্তি মাথাচাড়া দিতে পারে। দেশের কাঙ্ক্ষিত সংস্কার ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বক্তব্য শেষে কিশোরগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্থানে জুলাই গণহত্যার বিচার, আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ ৫ দফা দাবি সংবলিত লিফলেট বিতরণ করা হয়।
এ সময় কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা- ইমন খান, মারুফ আহমেদ হৃদয়, পায়েল চৌধুরী, রিপন রাজ, ফয়সাল, ইমরান, জেলার সাবেক ছাত্র নেতা অভি চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম ও জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন