বিএনপির রাজনীতি আয়নার মতো স্বচ্ছ বলে দাবি করেছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চকবাজার থানা বিএনপির উদ্যাগে বকশীবাজারের আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার এক কর্মশালায় তিনি এ দাবি করেন।
সভাপতির বক্তব্যে মজনু বলেন, শহীদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, নিজ হাতে অস্ত্র নিয়ে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন। অপর পক্ষে কিছু রাজনৈতিক দল সে সময় মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, এমনকি বুদ্ধিজীবীদের হত্যার অভিযোগও তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে। এখানে বিএনপির সঙ্গে অন্যদের পার্থক্য, বিএনপির রাজনীতি আয়নার মতো স্বচ্ছ। অন্যদের ঐতিহাসিক দায় রয়েছে- যা বিএনপির নেই।
তিনি বলেন, আগে ইতিহাসের দায় মোচন করুন- তারপর মানুষের কাছে যান, রাজনীতি করুন।
তিনি আরও বলেন, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরাই শহীদ জিয়াকে হত্যা করেন। তারা মনে করেছিলেন, জিয়াকে হত্যার মাধ্যমে বিএনপিকে নিঃশেষ করে দেবে। তারা ভেবেছেন, বিএনপি না থাকলে তাদের অশুভ মনোবাঞ্চনা পূরণ করতে পারবে, এই দেশকে অন্য দেশের করদ রাজ্যে পরিণত করতে পারবে। কিন্তু তাদের সে ভাবনা মিথ্যা প্রমাণিত করে বিএনপি দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির এ আহ্বায়ক বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা বিএনপির আন্দোলনমুখী নেতাকর্মীদের দমন করার জন্য গুম খুন করেছে। গত দেড় যুগে নাসির উদ্দীন আহমেদ পিন্টুর মতো ত্যাগী নেতাদেরও জেলখানায় বিনা চিকিৎসায় হত্যা করেছে।
মজনু অভিযোগ করেন, ১/১১-এর অপশক্তি আজ আবার লেবাস পাল্টে নতুন করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তাই আমাদের সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থেকে এদের প্রতিহত এবং প্রতিরোধ করতে হবে। ছাত্র-জনতার জীবন, রক্ত বৃথা যেতে পারে না, সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা হবে। তিনি আন্দোলনে শহীদদের পরিবার এবং যারা আহত হয়েছে, পঙ্গু হয়েছে তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য রাষ্ট্র, সরকারসহ সব রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক গোষ্ঠীর প্রতি আহ্বান জানান।
এ সময় নগর সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন বলেন, যারা ফ্যাসিবাদের উচ্ছিষ্টভোগী ছিল, তেমন রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ীসহ প্রশাসনিক কর্তাদের এখনো কেন লালন-পালন করা হচ্ছে এটা বোধ্যগম্য নয়।
তিনি অবিলম্বে এদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের সংগ্রামী জনগণ এদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়ার জন্য তৈরি আছে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের যারা আশ্রয়-প্রশয় দিবেন তাদেরও প্রতিহত করতে হবে।
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে এমন সংস্কার চাই, কিন্তু কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নের সংস্কার জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যে সব বিষয়ে সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, আমাদের নেতা তারেক রহমান ইতোমধ্যে ৩১ দফায় তা বিস্তারিত উপস্থাপন করেছেন।
তিনি বলেন, একটি দল নিজেদের দুর্বলতা এবং আসন্ন ভরাডুবি টের পেয়ে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টায় লিপ্ত। এ কারণে তারা নানা ধরনের অযৌক্তিক এবং অপ্রয়োজনীয় বিষয় সামনে নিয়ে আসছে।
ইশরাক প্রশ্ন রাখেন, যে মহিলা নিজ দেশের ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে লাশ পুড়িয়ে ফেলে তার এবং তার দলের কি এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার থাকে? তাকে কি রাজনীতি করতে দেওয়া উচিত?
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি উপস্থাপন করেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। ৩১ দফা কর্মসূচির বিশ্লেষণ এবং আলোচনা করেন বিএনপির সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম রাসেল, নাসিমা আকতার কল্পনা, হামিদুর রহমান হামিদ, বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেন খোকন প্রমুখ।
কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন উর রশীদ হারুন, আ ন ম. সাইফুল ইসলাম, লিটন মাহমুদ, এসকে সিকান্দার কাদির, হাজী মনির হোসেন চেয়ারম্যান, মীর হোসেন মীরু, সাইদুর রহমান মিন্টু, ফরহাদ হোসেন, মজিবুর রহমান মজু, বিএনপি নেতা শহীদুল ইসলাম বাবুল, দক্ষিণ শ্রমিক দলের সদস্য সচিব বদরুল আলম সবুজ, দক্ষিণ মহিলা দলের সভানেত্রী রুমা আকতার, সাধারণ সম্পাদক শাহীনুর নার্গিস প্রমুখ।
মন্তব্য করুন