সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনমুখী অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার করে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কাওরানবাজারে একটি হোটেলে স্কুল অব লিডারশিপ (এসওএলই-ইউএসএ) আয়োজিত ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেমন প্রার্থী চাই’- শীর্ষক জাতীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
মঈন খান বলেন, আগে সংস্কার করব, পরে অন্য কিছু করব- এটা তো হতে পারে না। সংস্কার শেষ করে এরপর নির্বাচন, এটা হতে পারে না। তাহলে সংস্কার শেষে নির্বাচন দেওয়ার পরে সংস্কারের কাজ কি বন্ধ হয়ে যাবে? আমাদের মনে রাখতে হবে, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, মানুষ ২০১৪, ১৮ ও ২৪ সালের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে। কিন্তু ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে যে নির্বাচন হলো, সেটা নিয়ে কেন প্রশ্ন তোলে না? এক-এগারোর যে পরিকল্পনা ছিল, বিরাজনীতিকীকরণ; সেই সমস্যা আজও কিন্তু দেখতে পাচ্ছি। আমাকে ক্ষমা করবেন। তার একটি ইঙ্গিত নতুন করে চলে এসেছে। এখানে আলোচনা করতে এসেছি নির্বাচনে কেমন প্রার্থী চাই, (বিরাজনীতিকীকরণ হলে) এসব কিন্তু ভেস্তে যাবে।
আগামী নির্বাচনে প্রার্থীকে সৎ ও মানবিক হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সেলিমা রহমান। তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের পর সব জায়গায় পরিবর্তন হয়নি। দলবাজির মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
সংলাপে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে সহিংসতা কমে যাবে। কালো টাকার মালিক, যাদের এলাকাবাসী চেনেন না- তিনি প্রার্থী হয়ে গেলেও পরে এই টাকা তুলতে নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে যান। কিন্তু পিআর–পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে টাকার ভিত্তিতে প্রার্থী হতে হবে না।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, প্রার্থী হিসেবে কেবল ভালো মানুষ দিলেই হবে না; বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় নির্বাচনে প্রার্থী ঠিক করার ক্ষেত্রে ‘বিজয়ী হতে পারার বিষয়টিও’ সামনে চলে আসে। তিনি আরও বলেন, কোন দল কাকে প্রার্থী করবে, তা ওই দলের আদর্শের ওপর নির্ভর করে। ফলে এ ধরনের আলোচনা বা সংলাপ- নির্বাচনে প্রার্থী ঠিক করার বিষয়ে মূলত কোনো প্রভাব রাখে না।
স্কুল অব লিডারশিপের ভাইস প্রেসিডেন্ট মেজর (অব.) রুহুল আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জামিল আহমেদের সঞ্চালনায় সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম মতিনুর রহমান।
সংলাপে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক এম এম শরীফুল করিম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. শিশির মনির, এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ প্রমুখ।
মন্তব্য করুন