বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, যে নৌকা বাংলাদেশে ডুবে গেছে সেই নৌকা আর কখনো ভাসবে না। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা সিদ্ধান্ত দিয়েছে যে, আওয়ামী লীগ চ্যাপ্টার বাংলাদেশে খতম।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
হাসনাত বলেন, আজ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষ আলোচনা করেছে, আমরা একটি বিষয়ে একমত হয়েছি যে ২৪-পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ অপ্রাসঙ্গিক। আমরা আহ্বান জানিয়েছি, সরকার যেন উদ্যোগ নিয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে এবং পরবর্তী কোনো প্রক্রিয়ায় যেন আওয়ামী লীগ ক্রিয়াশীল না হতে পারে, সে বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রথম ধাপ হিসেবে আমরা দলটির নিবন্ধন বাতিল করার প্রস্তাব দিয়েছি। এ বিষয়ে আমরা সব দলকে ঐকমত্যের জায়গায় পেয়েছি।
এ সময় জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে যারা রাজপথে আন্দোলনে ছিল, হাসিনা ও তার দোসররা কিন্তু তাদের ছাড়বে না। সেই জায়গায় আমরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কোনো নেগোশিয়েশনের চিহ্ন দেখতে চাই না।
সারজিস আলম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে যারা দোষী, খুনি, তারা যেই দল-মতেরই হোক না কেন, তাদের শাস্তি হতে হবে। এই বিচারিক প্রক্রিয়ায় আমরা কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করি না। এটা আমাদের জায়গা থেকে স্পষ্ট করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, এমন কিছু যদি দেখি, তাহলে আমরা আমাদের জায়গা থেকে, জাতীয় নাগরিক কমিটি বলেন আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলেন–আমরা আবারও প্রতিবাদ করব।
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, আজকে সব দলের অংশগ্রহণে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন- এটা আমাদের দ্বিতীয় ইনিংস। আমরা এই দ্বিতীয় ইনিংসে অংশীজন হয়েছি। তিনি সবাইকে ধৈর্যধারণ করতে বলেছেন। আমরা বলেছি- একটি টেস্ট ম্যাচের মধ্যদিয়ে (স্থানীয় সরকার নির্বাচন) আমাদের যেতে হবে।
নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ধৈর্য ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে দেশের ৫৩ বছরের অসমাপ্ত কাজগুলো সংস্কার কমিশনগুলোর ইফেক্টিভিটির মধ্যদিয়ে সমাপ্ত করতে হবে। অনেক দলই স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছে। আমরাও মনে করি, লোকাল গভর্নমেন্ট ফাংশনাল করতে হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক বলেন, আওয়ামী লীগের যারা দোসর রয়েছে এবং আওয়ামী লীগের যারা এখনো স্থানীয় সরকারের জায়গাগুলোয় রয়েছে, তারা ফাংশনালিটি (ফ্যাসিবাদী কার্যকলাপ) বজায় রেখেছে। এজন্য লোকাল গভর্নমেন্টে (স্থানীয় সরকার) একটা টেস্টের মধ্যদিয়ে জাতীয় নির্বাচনে যেতে হবে। আমরা মনে করি, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার জন্য একটি নির্বাচনের প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন