ছাত্রজনতার হত্যাকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক রফিকুল আলম মজনু।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে, রাজধানীর সদরঘাটে পার্কিং ইয়ার্ডে কোতোয়ালি থানা বিএনপি আয়োজিত এক কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।
মজনু বলেন, ফ্যাসিস্ট ও খুনিদের শুধু বিএনপিতে নয়, অন্য কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দিলে সেখানেও প্রতিরোধ করা হবে। পতিত স্বৈরশাসকের দোসররা এখন নিজেদের খোলস পাল্টানোর চেষ্টা করছেন। যারা ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে এবং মদদ দিয়েছে তাদের কোনো ছাড় নেই।
তিনি আরও বলেন, আল্লাহ পাপীদের বিচারের নমুনা পৃথিবীতেই দেখিয়ে থাকেন। খালেদা জিয়াকে এক কাপড়ে তার বাড়ি থেকে বের করেছিলো হাসিনা। আজকে দেশের ছাত্রজনতা শেখ হাসিনার বাড়ি ইট খুলে নিয়ে গেছে। অনুশোচনা করলে আল্লাহতায়ালাও ক্ষমা করে দেন। কিন্তু হাজার হাজার ছাত্রজনতাকে হত্যা করেও শেখ হাসিনার ভিতর কোনো অনুশোচনা নেই।
বিএনপি এই নেতা বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ছাত্রজনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে এদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করেছে, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তাদের বিতাড়িত করেছে। সেই আওয়ামী লীগ তাদের দলের ব্যানারে আর রাজনীতি করতে পারবে না। আমরা আওয়ামী লীগের গণহত্যার এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচার দাবি করছি।
অনুষ্ঠানে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, সচিবালয় থেকে শুরু করে নিম্মস্তরে ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড পর্যায়ে শাসন ও ক্ষমতার পরিবর্তন আনতে হবে। নতুবা কোনো পরিবর্তনের সুফল পাওয়া যাবে না। তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান কয়েক দিনের ব্যবধানে সংবিধান পরিবর্তন করে দিয়ে বাকশাল কায়েম করেছে, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। শহীদ জিয়া দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছেন। খালেদা জিয়া দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করেছেন। আর তারেক রহমান ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় দেওয়ার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
এসময় ‘শেখ হাসিনা দেশের বাইরে থেকে বিশৃঙ্খলা করার জন্য অর্থ বিনিয়োগ করেছেন’ প্রধান উপদেষ্টা এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন বলেন, শেখ হাসিনার দোসররা উপদেষ্টা পরিষদে অন্তর্ভুক্ত আছেন। আমরা পরামর্শ দিয়েছিলাম বাদ দেওয়ার জন্য, কিন্তু আপনারা শোনেন নাই। শেখ হাসিনার দোসররা প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বহাল রয়েছে। এদের বহাল রেখে আপনি বেশি দূর এগোতে পারবেন না। শেখ হাসিনার নিয়োজিত মন্ত্রিপরিষদ সচিব ২ মাস ৫ দিন চাকরি করে অবসরে গেছেন। কিন্তু তিনি আপনার হয়ে কাজ করছেন নাকি শেখ হাসিনার পারপাস সার্ভ করেছেন। এভাবে সচিবালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ সব জায়গায় ফ্যাসিবাদের দোসররা বসে আছে, আপনি কীভাবে সফল হবেন?
রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপস্থাপিত ৩১ দফা সংস্কার ও জনসম্পৃক্তির এই ধারাবাহিক কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় সদস্য হামিদুর রহমান হামিদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন উর রশীদ হারুন, লিটন মাহমুদ, আবদূস সাত্তার। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন হাজী মনির হোসেন চেয়ারম্যান, সাইদুর রহমান মিন্টু (দপ্তরের দায়িত্বে), ফরহাদ হোসেন, মোশাররফ হোসেন খোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক জহির উদ্দিন তুহিন, শ্রমিক দলের আহবায়ক সুমন ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক বদরুল আলম সবুজ। পাশাপাশি অঙ্গসহযোগী সংগঠনের, হাজী কামাল হোসেন, হাজী মোহাম্মদ নাজিম, মীর হাসান কামাল তাপস, সরাইয়া বেগম, শফিকুল ইসলাম রতন, আব্দুর রহিম, হায়দার আলী বাবলা, আনোয়ারুল আজিম ও মোস্তাক আহমেদসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন