গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুতির পর ভারতে পালিয়ে থাকা শেখ হাসিনার অনলাইন ভাষণের ঘোষণায় উত্তেজিত ছাত্র-জনতা রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে অবস্থিত শেখ মুজিবের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়েছে। এমনটি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ পরিবারের নাম মুছে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
বুধবার ( ০৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে তিনি একটি স্ট্যাটাস দেন।
স্ট্যাটাসে জামায়াতের আমির সার্বিক পরিস্থিতির জন্য পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার উসকানিই মূলত দায়ী বলে উল্লেখ করেন। এতে ডা. শফিকুর রহমান লিখেছেন, ‘মনে রাখতে হবে, শেখ হাসিনা কখনোই বাংলাদেশের মানুষকে অন্তরে ধারন করে না। এটি তার ঘৃণিত স্বভাব।’
এর আগে শেখ হাসিনার অনলাইন ভাষণের ঘোষণা আসার ঘটনায় এর পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর নেতাকর্মীরা ঘোষণা করেন, শেখ হাসিনা কোনো বক্তব্য দিলে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।
বুধবার বিকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর অভিমুখে মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। রাত ৮টায় শাহবাগ থেকে এ মিছিল শুরু করার কথা থাকলেও বিকাল থেকেই ধানমন্ডি ৩২ এলাকায় জড়ো হতে থাকে ছাত্র-জনতা। সন্ধ্যা হতে হতে সেখানে ব্যাপক জনসমাগম দেখা যায় এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী নানা স্লোগান দিতে শোনা যায়।
একপর্যায়ে উত্তেজিত ছাত্র-জনতা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং সেখানে ভাঙচুর শুরু করে। উত্তেজিত ছাত্র-জনতার উপস্থিতি ও ভাঙচুরের কারণে ৩২ নম্বরের আশপাশের বিপণিবিতানগুলো বন্ধ হয়ে যায় দ্রুত। একপর্যায়ে ওই সড়কে যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়।
কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসা জনতা বলছেন, ‘এই বাড়ি স্বৈরাচারের তীর্থভূমি হিসেবে চিহ্নিত। বুলডোজার দিয়ে আজ স্বৈরাচারের এই চিহ্ন মুছে দেওয়া হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, হাসিনাকে বক্তব্য প্রকাশের সুযোগ দেওয়াকে বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী জনগণের বিরুদ্ধে ভারতের যুদ্ধ হিসেবে দেখি। পরে সন্ধ্যায় ফেইসবুকে আরেক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে।’
মন্তব্য করুন