জুলাই ঘোষণাপত্রে আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে থাকা সবার অবদানের স্বীকৃতি চান জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও এলডিপি।
শনিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে সমমনা জোট ও এলডিপির নেতারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রণয়ন নিয়ে আলোচনায় এ অভিমত দেন।
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধকে ভিত্তি করে বাহাত্তরের সংবিধান অক্ষুণ্ন রাখার পক্ষে মত দেন জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও এলডিপি। তাদের অভিমত, বাস্তবতার নিরিখে সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনা যেতে হবে, তবে সংবিধান বাতিল নয়। এছাড়া ঘোষণাপত্রে আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে থাকা সবার অবদানের স্বীকৃতি চান তারা। স্বাধীনতার ঘোষণা, ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লব, ’৯০-এ স্বৈরাচার এরশাদ পতন আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলনসহ স্বাধীনতার পর যত গণতান্ত্রিক আন্দোলন হয়েছে, ঘোষণাপত্রে সেগুলোও অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন জোট নেতারা।
বিএনপি ইতোমধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটা খসড়া ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করেছে। দলটি জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই রাজনৈতিক ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে চায়। এরপর সরকারের সঙ্গে আলোচনায় চূড়ান্তকৃত এই খসড়া তাদের কাছে হস্তান্তর করবে বিএনপি। এ লক্ষ্যে এখন যুগপতের শরিক এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে পৃথকভাবে রাজপথে সক্রিয় থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী অন্য দলগুলোর সাথে ধারাবাহিক আলোচনা করছে।
গত শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) প্রথম দিনে ১২ দলীয় জোট ও জমিয়তের সঙ্গে বৈঠক করে দলটি। জানা গেছে, বিএনপির তৈরিকৃত খসড়ায় মৌলিক কোনো পরিবর্তন হবে না। তবে মিত্রদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে সেখানে টুকটাক পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংশোধন হতে পারে।
বিএনপির সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, আমরা সংবিধান বাতিল ও বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন করা যাবে না বলে বিএনপিকে জানিয়েছি। ছাত্ররাসহ কেউ যদি মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত দেশের নাম পরিবর্তন করতে চায়, আমরা তাদের সঙ্গে নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে আছি। বিএনপি যদি নতুন কোনো কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে, তাহলে আমরাও সেখানে থাকব। তবে আজকের বৈঠকে যুগপতের কর্মসূচি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
বৈঠক প্রসঙ্গে এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ বলেন, ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকার পতনের একদফার আন্দোলন আমরা কয়েক বছর আগে থেকেই শুরু করেছিলাম। ছাত্ররা প্রথম ৯ দফা দিয়েছিল। পরে তারা একদফা ঘোষণা করেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রে ফ্যাসিবাদবিরোধী দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে থাকা সবার অবদানের স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে মতামত দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
বিএনপির সাথে প্রথম দফায় ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নেতৃত্বে সমমনা জোটের প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে অংশ নেন জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, গণদলের গোলাম মওলা চৌধুরী, এনডিপির আবু তাহের, বাংলাদেশ ন্যাপের এমএন শাওন সাদেকী, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টির এসএম শাহাদাত, ডিএলের খোকন চন্দ্র দাস, এনপিপির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
দ্বিতীয় দফায় এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদের নেতৃত্বে দলটির ৬ সদস্যর একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।
মন্তব্য করুন