বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেছেন, ড. ইউনূসের সম্মান সারা বিশ্বজুড়ে। তিনি এই সরকারের প্রধান হয়ে কাজ করছেন। কিন্তু, সেই উপদেষ্টা পরিষদ থেকে যখন আমিত্ব কথা ভেসে আসে, আমি এটা করব, আমরা এটা করেছি, এসব কথা শুনলে কষ্ট লাগে।
তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনাও এরকম কথা বলেছে সবকিছু তাদের। আর কারও কিছু নাই। দেশের জনগণের কিছু নাই। তার পতন হয়েছে।
শনিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী দোসরদের নানামুখী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে নাগরিক প্রতিবাদ সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সেলিমা রহমান বলেন, উপদেষ্টারা দল করবে খুব ভালো কথা নতুন প্রজন্ম আগামী দিনে দেশ চালাবে ছাত্র-যুবক ’৫২ ভাষা আন্দোলন ’৬৯-এর গণআন্দোলন ’৯০-এর স্বৈরাচারী আন্দোলন অভ্যুত্থান সবসময়ই তরুণ সমাজ সেটি করেছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে এরকম ক্ষমতার লোভ ছিল না। তারা দেশের জন্য এসব সময় অংশগ্রহণ করেছিল এবং যার যার জায়গায় তারা সে সময় চলে গিয়েছিল। আপনারা সরকার থেকে দল করবেন সেটা হবে না। কথা বলবেন হিসাব করে বিএনপি একটি বড় দল এবং ঐতিহ্যবাহী দল সেই দলের বিরুদ্ধে কথা বলতে হলে সংযত হয়ে কথা বলতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি সবসময় দেশের জন্য লড়াই করেছে। দেশের স্বাধীনতার প্রতি জিয়া পরিবারের বড় ভূমিকা ছিল। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এদেশের জন্য রক্ত দিয়েছেন। শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তরের যুদ্ধের সময় আত্মসমর্পণ করেছিল। সে কখনো মুক্তিযুদ্ধ চায় নাই। তার কন্যা শেখ হাসিনা কখনো এ দেশের ভালো চাই নাই তারা শুধু চেয়েছে এই দেশের মাটি। এদেশের ক্ষমতা। আওয়ামী লীগ মানেই হল জঙ্গি, লুটপাটকারী, দেশ ধ্বংসকারী, টাকা পাচারকারী।
তিনি বলেন, এখন খবরের কাগজে রোজ দেখা যাচ্ছে, কীভাবে একটা পরিবার দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা পাচার করেছে। এদেশের সমস্ত সম্পদ লুটে নিয়ে গেছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একেবারে নিঃশেষ করে দিয়েছে। পুলিশকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। এখনো আমরা বিভিন্ন জায়গায় দেখি পুলিশি কার্যক্রম ভালোভাবে চলছে না। দোসরা পালিয়ে গেছে ঠিক, কিন্তু তারা এখনো আমাদের প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তারা ঘাপটি মেরে আছে।
পত্রিকায় দেখলাম ছাত্র লীগ পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে লিফলেট বিতরণের কর্মসূচি দিয়েছে। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ যারা সন্ত্রাসী করেছে, তাদের আমরা এদেশে আসতে দিব না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্য সেলিমা রহমান আরও বলেন, এখনো একটি শক্তিশালী শিক্ষা কমিশন গঠন হয় নাই। বাংলাদেশের মানুষ এখনো নিরাপদ নেই। আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী দোসরা আজ চেপে বসে আছে তাদের এখনো সরানো যায়নি।
তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে আন্দোলন সংগ্রাম বেড়েই চলেছে রাস্তাঘাট অবরোধ এবং দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বহুগুণ বেড়ে গেছে সে বিষয়টি সরকার কে খেয়াল রাখতে হবে।
জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরামের সভাপতি মনজুর রহমান ভূঁইয়া সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম ও সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম স্বপন রানা সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি হারুন অর রশিদ, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হক, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি বিলকিস ইসলাম, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন, জাতীয়তাবাদীর স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি ইয়াছিন আলী, তাঁতীদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনির, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর শাহ আলম, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, জিয়াউর হক জিয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাশফিকুল হক জয়সহ প্রমুখ।
মন্তব্য করুন