বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই আমরা ফ্যাসিবাদের পতন চেয়েছি। ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, কিন্তু আমরা এখনো গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারিনি।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (মহাসচিব মাওলানা আফেন্দী) সঙ্গে বিএনপির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের নজরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। বৈঠকে বিএনপির নেতৃত্ব দেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, একটি অবাধ, নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক ভোটের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে ইনশাআল্লাহ। এই রকম একটা নির্বাচন করার জন্য যা সংস্কার প্রয়োজন, সেগুলো করেই নির্বাচনটা হবে। সেটার জন্য ন্যূনতম প্রয়োজনীয় যে সময়, সেটা তো লাগবে। আমরা আলোচনা করে যেটা মনে করছি, সে জন্য খুব বেশি সময় লাগবে না।
বিএনপি ইতোমধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের খসড়া ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করেছে। যুগপৎ আন্দোলনের শরিক এবং যুগপতের বাইরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে পৃথকভাবে রাজপথে সক্রিয় থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী দলের মতামতে সেটি চূড়ান্ত করতে তাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক শুরু করেছে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে এই বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে জমিয়ত নেতাদের মধ্যে ছিলেন মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার, মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া, মাওলানা তাফাজ্জল হক আজীজ, মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী ও মাওলানা নাজমুল হাসান।
এর আগে বিকেলে একই স্থানে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম। অন্যদিকে ১২ দলীয় জোট প্রধান ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে বৈঠকে ছিলেন বাংলাদেশ এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তের গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, লেবার পার্টির লায়ন মো. ফারুক রহমান, জাগপার রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম, পিএনপির ফিরোজ মো. লিটন প্রমুখ।
বৈঠক শেষে জমিয়তের গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম বলেন, আমরা ঐকমত্য হয়েছি একটা জায়গায়, যেকোনো মূল্যে আমাদের ঐক্য অটুট রাখতে হবে। আমরা যৌক্তিক সময়ের মধ্যে দ্রুত নির্বাচন চাই। আমরা যখন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেছি তখনো বলেছিলাম, এখনো বলছি- প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে ২০২৫ সালের মধ্যেই জাতির বহুল প্রতীক্ষিত নির্বাচন আমরা প্রত্যাশা করছি। আশা করছি, অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনে সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে যতটুকু সংস্কার দরকার, সেটা করে জাতিকে নির্বাচনের পথে নিয়ে যাবে।
বৈঠকের বিষয়ে বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মো. ফারুক রহমান কালবেলাকে বলেন, দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সংস্কারসহ নানান বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রকাঠামোর কী ধরনের সংস্কার করতে চায়, সেটা দ্রুত তাদের স্পষ্ট করে জানাতে হবে। আমরা দ্রুত নির্বাচনমুখী প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন চাই। গত ১৬ বছর ধরে ভোটাধিকার বঞ্চিত দেশের মানুষ এখন ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে রয়েছে। তাছাড়া পতিত ফ্যাসিবাদের নানান ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবিলায় নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই।
মন্তব্য করুন