গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে কেউ রাজনীতিতে টিকে থাকতে পারেনি বলে দাবি করেছেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। তিনি বলেন, বিএনপির একটি সংগ্রামী ইতিহাস আছে। নেতাকর্মীরা গণতন্ত্রের প্রশ্নে জীবন দিতে জানে। প্রয়োজনে আবারও রাজপথে নেমে দেশে সুস্থধারার রাজনীতি ফিরিয়ে আনবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) কুষ্টিয়ায় ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় টুকু এসব কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপি এই নেতা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার হচ্ছে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফসল। সংস্কার কার্যক্রমের নামে নির্বাচন দীর্ঘায়িত করলে কিন্তু আপনারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন। আর জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কেউ বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের ছত্রছায়ায় নতুন রাজনৈতিক দল গঠিত হতে যাচ্ছে। তাহলে কি আমরা ধরে নিব, এই নতুন দলকে মাঠ গোছানোর সুযোগ দেওয়ার জন্যই নির্বাচন পেছানোর চক্রান্ত চলছে?
সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, নতুন দল নিয়ে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই। তবে রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে, প্রশাসনকে ব্যবহার করে কোনো রাজনৈতিক শক্তিকে দেশবাসী মেনে নিবে না। রাজনৈতিক দল গঠন করতে হলে জনমত তৈরি করেন। কিন্তু আরেক দলকে কটাক্ষ করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটের চেষ্টা করা হলে আমরা বসে থাকব না।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে টুকু বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান বহুমুখী প্রতিষ্ঠান। স্বল্প পরিসরে তাকে নিয়ে আলোচনা করা কঠিন। তার কর্মকাণ্ড বিরাট বিস্তৃত। তিনি একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক। যথা সময়ে দেশের মানুষের প্রয়োজন বুঝতে পেরেছিলেন। তার গুণাবলি ছিলো অপরিসীম।
স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের আমলে ১৬ বছরে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা খুন-গুম, হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন। দেশ ও দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কর্মীরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। জনগণ বিশ্বাস করে, আগামীতে দেশের যদি ভালো কিছু হয়, সেটা বিএনপির দ্বারাই হবে।
৭১ সালে একটা দল মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়ে দেশ ছেড়ে নিরাপদ স্থানে পালিয়ে গিয়েছিল উল্লেখ করে সুলতান সালাউদ্দিন বলেন, আরেকটি দল মহান মুক্তিযুদ্ধের সরাসরি বিরোধিতা করেছে। কিন্তু বিএনপি এমন একটি দল যারা মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তীতে দেশ গঠনে নিরলসভাবে কাজ করেছে।
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অপেক্ষায় আছি। পুরো জাতি নির্বাচনের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। জনগণ বিএনপিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আনার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। আগামী নির্বাচনে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে হলে আমাদের সকল নেতাকর্মীকে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে ও দেশের জনগণের চাহিদা মেটাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই। বিএনপির ৩১ দফা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। ৩১ দফা বাস্তবায়ন হলে মানবিক বাংলাদেশ, স্বচ্ছ বাংলাদেশ এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠিত হবে।
এ সময় কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন