কচিকাঁচা কিশোর তরুণরা চেয়েছে হাসিনার পদত্যাগ, হাসিনা করেছে দেশত্যাগ উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আবু জাহেলের পতন যেমন দুই কিশোরের হাতে হয়েছে, শেখ হাসিনার পতনও শিশুদের হাতে হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর সূত্রাপুর উত্তর থানা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ফেরাউন আর নমরুদের মতো যেই শাসক যতবেশি জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে, নিজেকে হিংস্র করে তুলেছে, দাম্ভিকতা দেখিয়েছে সেই শাসকের পতনও তত নিকৃষ্টতার মাধ্যমে হয়েছে। রাজনৈতিক আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন হলে রাজপথে কিছুটা হলেও ইজ্জত রক্ষা হতো কিন্তু আল্লাহ এই অংহকারী নির্লজ্জ বেহায়া মহিলাকে কচিকাঁচা কিশোর তরুণদের মাধ্যমে পতন ঘটিয়েছে।
দরবেশ খ্যাত জাতীয় চোর কারাগারে বসে রাষ্ট্র নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে মাসুদ বলেন, গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়, দরবেশ খ্যাত জাতীয় চোর সালমান এফ রহমানসহ আওয়ামী লীগের নেতারা কারাগার থেকে টিস্যু পেপারে করে প্রশাসনে থাকা তাদের দলীয় আমলাদের নিদের্শনা লিখে দিচ্ছে কীভাবে সরকারকে উৎখাত করতে হবে, কীভাবে রাষ্ট্রে অরাজকতা তৈরি করতে হবে। কিছু কিছু আমলা টিস্যু পেপারের সেই নিদের্শনা বাস্তবায়নেও মনোযোগী হতে দেখা যাচ্ছে। সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশ ও জাতির স্বার্থে কঠোর হতে হবে। রাষ্ট্র নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
এ সময় তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াত-শিবিরসহ বিরোধী দল ও মতের নেতাকর্মীদের বিনা অপরাধে আটক করে এনে মামলা সাজিয়ে বছরের পর বছর জুলুম চালিয়েছে। জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের শুক্রবার ও শনিবার শেষ বিকেলে আদালতে তোলা হতো শুধু একতরফা শুনানি করে রিমান্ড মঞ্জুর করার জন্য। কারণ ছুটিরদিন এবং ধার্যদিন ব্যতীত কোর্টে আনা হলে, আমাদের আইনজীবীদের পাওয়া যাবে না। তারা সরকারি উকিল দিয়ে আমাদের রিমান্ড করিয়ে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। কতটা নির্মমতা করুণ সেই দৃশ্যপট সেটি ভুক্তভোগী ব্যতীত সহজে বুঝা যায় না। অথচ আওয়ামী লীগের খুনি, চোর, ডাকাত, দুর্নীতিবাজ, বিনাভোটে নির্বাচিত এমপি মন্ত্রীরা কারাগারে জামাই আদরে রয়েছে। তাদের যখন কারাগার থেকে আদালতে তোলা হয়, হাতে হ্যান্ডকাপও দেখা যায় না। আর জামায়াত-শিবিরের নেতাদের ডান্ডাবেড়ি লাগিয়ে আদালতে আনা হয়েছিল। পিতামাতার এমনকি সন্তানের জানাজায়ও ডান্ডাবেড়ি লাগিয়ে রাখা হয়েছিল! হাত তুলে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি! এর কারণ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হওয়া। মানুষের তৈরি আইনে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়নি এবং হবেও না। ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে, অপরাধ প্রবণতা হ্রাস পাবে এবং সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকবে। তাই তিনি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সূত্রাপুর উত্তর থানা আমির মো. রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের অফিস সেক্রেটারি ও সূত্রাপুর- ওয়ারী-গেন্ডারিয়া জোন পরিচালক কামরুল আহসান হাসান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সহকারী সম্পাদক এবং সূত্রাপুর-ওয়ারী-গেন্ডারিয়া জোনের সহকারী পরিচালক আবদুস সাত্তার সুমন।
নর্থব্রুক হল রোডের বিশিষ্ট ব্যবসায়ীদের সম্মানে স্থানীয় এক কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত এই সুধী সমাবেশে সূত্রাপুর উত্তর থানা জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীল নেতারা ও স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন