কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

জন্মদিনে প্রিয়জনের শুভেচ্ছায় সিক্ত মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : সংগৃহীত
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : সংগৃহীত

জন্মদিনে ভোর থেকেই শুভাকাঙ্ক্ষী-প্রিয়জনের শুভেচ্ছায় সিক্ত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ৭৮তম জন্মদিনে দাঁড়িয়ে ‘গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার’ কথাও বললেন তিনি।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) ৭৭ বছর পূর্ণ করলেন মির্জা ফখরুল। ১৯৪৮ সালের এ দিনে ঠাকুরগাঁওয়ে তার জন্ম।

টেলিফোনে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, বুড়ো হয়ে গেছি। এখন তো বিদায়ের প্রান্তে। তারপরও মনের ভেতরে যে স্বপ্ন, যে প্রত্যাশা, তা কিন্তু চিরঞ্জীব আছে। সেটা হচ্ছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে। বয়সের এ প্রান্তে এসে এ বিশ্বাসটুকু আমি লালন করি। আমাদের রাজনৈতিক যে সংকটগুলো, যে চ্যালেঞ্জগুলো তা অধিকাংশই সমাধান করা সম্ভব হবে এবং বাংলাদেশ গণতন্ত্রে ফিরে যাবে- সে প্রত্যাশায় আছি আর কী।

‘শরীরটা ভালো যাচ্ছে না’ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এবার আমার গোটা পরিবারই ঢাকায়। একসঙ্গে এবার এ দিনটি কাটাচ্ছি।

জন্মদিন নিয়ে নিজের অনুভূতি কেমন জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, জন্মদিন আমি আসলে পালন করি না। ৭৭ বছর বয়স পেরুলাম, বলতে পারেন একটা লং জার্নি। এ ৭৭ বছরে বহু পরিবর্তন দেখেছি, বহু ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি, বহু জীবন দেখেছি, অনুপ্রাণিত হয়েছি। বেঁচে থাকার অর্থ খুঁজে পেয়েছি। এখন যাওয়ার পালা।

তবে আশা এখন একটাই, প্রত্যাশা একটাই, বাংলাদেশ গণতন্ত্রের দিকে যাবে, গণতন্ত্র ফিরে পাবে। এ গণতন্ত্রের জন্য আমাদের দেশের মানুষ, আমাদের বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মী যে আত্মত্যাগ করেছে, ফ্যাসিস্টদের যে নিপীড়ন-নির্যাতন ভোগ করেছে, গুম-খুনের শিকার হয়েছে, নির্মমতার মুখে পড়েছে- এ রকম চিত্র আপনি কোথাও খুঁজে পাবেন না। এটা নজিরবিহীন।

সকালে বিএনপি মহাসচিবের ঘুম ভাঙে দুই মেয়ের ‘হ্যাপি বার্থ ডে’ শুনে। নাতি-নাতনিরাও উইস করেছে নানাকে। মির্জা ফখরুল বলেন, এটা অন্যরকম এক আনন্দ। ২৬ জানুয়ারি জন্মদিনের প্রথম প্রহর থেকেই বন্ধু, স্বজন, নেতাদের অনেকে টেলিফোন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, সকাল বেলা স্ত্রী রাহাত আরা বেগমও জন্মদিনের উইশ করেছেন। লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, সিনিয়র নেতারাও টেলিফোন করেছেন।

ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করে আসা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন শাখার সভাপতি এবং এসএম হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করে শিক্ষকতায় যোগ দিয়েছিলেন ফখরুল। ঢাকা কলেজ, দিনাজপুর কলেজে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন তিনি। ১৯৮৬ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে তিনি পুরোপুরি রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৮৮ সালে ঠাকুরগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে জিতে হন চেয়ারম্যান।

ছাত্রজীবনের বাম রাজনীতি থেকে উঠে আসা মির্জা ফখরুলের জাতীয় রাজনীতিতে হাতেখড়ি মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর দল ন্যাপে, ভাসানীর হাত ধরে রাজনীতি আকাবাঁকা পথ অতিক্রম করেছেন। সেখান থেকেই তার বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক দল, জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিতে যোগদান, যে দলটির প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক জিয়াউর রহমান।

১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে তৎকালীন উপপ্রধানমন্ত্রী এস এ বারীর একান্ত সচিব ছিলেন ফখরুল। ১৯৯২ সালে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি, পরে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদে উঠে আসেন তিনি। ২০১১ সাল থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এবং ২০১৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে মহাসচিব নির্বাচিত হন। বিএনপির শীর্ষ পর্য়ায়ের নেতৃত্বে আসার আগে তিনি জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের প্রথম সহসভাপতি এবং পরে সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন দীর্ঘদিন। ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ফখরুল। ২০০১-২০০৬ মেয়াদের বিএনপি সরকারে তাকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া।

২০১৮ সালে একাদশ নির্বাচনে বগুড়া-৬ আসন থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে তিনি শপথ না নেওয়ায় ওই আসনে উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে বিএনপির জিএম সিরাজ সংসদে যান।

মির্জা ফখরুল গণমাধ্যমকে বলেন, জন্মদিন মানে আরও একটি বছর চলে গেছে। অন্যান্য বছর বড় মেয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে টেলিফোন করে। এবার কিন্তু সেটি হয়নি। বড় মেয়ে ও তার পরিবার কয়েকদিন আগেই ঢাকায় এসেছে। ফলে বড় মেয়ে-ছোট মেয়েসহ আমার গোটা পরিবারই এখন ঢাকায়। বলতে পারেন আমার মেয়েরা ‘হ্যাপি বার্থে ডে’ বলল। আপনার ভাবিও (রাহাত আরা বেগম) বার্থ ডে’র উইশ করেছে।

দুই মেয়ে নিয়েই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রাহাত আরা বেগমের সংসার। বড় মেয়ে মির্জা শামারুহ অস্ট্রেলিয়ায় স্বামী-সন্তান নিয়ে থাকেন। সিডনির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরাল ফেলোশিপ নিয়ে এখন ক্যানবেরার ফেডারেল মেডিকেল কাউন্সিলের সিনিয়র সায়েন্টিস্ট হিসেবে কাজ করছেন। কয়েকদিন আগেই শামারুহ মির্জা ও তার স্বামী ঢাকায় এসেছেন। ছোট মেয়ে মির্জা সাফারুহ ধানমন্ডির সানি ডেল স্কুলে শিক্ষকতা করেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে ৩০৪ কোটি টাকা মুনাফা করেছে ওয়ালটন

‘ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করবে বিএনপি’

ট্রাম্পের সঙ্গে মোদির ফোনালাপ, যা আলোচনা হলো

পর্যটকদের জন্য সেন্টমার্টিন দ্বীপ উম্মুক্ত করার দাবি

বুমরার মাথায় আইসিসি বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটারের মুকুট

চট্টগ্রামে সাংবাদিক লাঞ্ছিত করার ঘটনায় সিইউজের নিন্দা

ঢাবির বাস ঢাকা কলেজের সামনে দিয়ে যেতে দেবেন না শিক্ষার্থীরা, যদি...

গাজীপুর বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

টানা তিন জয়ে প্লে-অফের পথে রাজশাহী

ইরানকে ভয়ংকর যুদ্ধবিমান দিচ্ছে রাশিয়া

১০

ছাত্রলীগের হাতুড়ি পড়েছিল সমন্বয়ক নুসরাতের ওপর!

১১

মধ্যরাত থেকে ট্রেন না চালানোর ঘোষণা

১২

খুলনার ঐতিহ্যবাহী পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র ‘দখলে’ নিল গণঅধিকার পরিষদ

১৩

প্রথম বিভাগের মধ্যেই আলোচনায় প্রিমিয়ার

১৪

আ.লীগ স্বাধীনতার শক্তি নয়, পলাতক শক্তি : নয়ন

১৫

চুরির অভিযোগে বৃদ্ধকে কান ধরিয়ে বাজার ঘুরানোর অভিযোগ

১৬

বিদেশি বিনিয়োগের ২৯ শতাংশই অবদান বেপজার

১৭

টাকা নেই? দল কেন?—বিপিএল নিয়ে মালানের প্রশ্ন

১৮

প্রভাবশালীদের কাছ থেকে পৈতৃক জমি ফিরে পেতে মানববন্ধন

১৯

কমতে পারে ইন্টারনেটের দাম

২০
X