জাতীয় নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো পথ খুঁজতে গেলে জনমনে সন্দেহ-উদ্বেগ বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়া ছাড়া গণতন্ত্রের অগ্রগতির সুযোগ নেই। আর গণতন্ত্রের শুরু ও অগ্রগতির জন্য একমাত্র পথ নির্বাচন।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি আয়োজিত ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন বিলম্বিত করার কোনো সুযোগ নেই। জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়া ছাড়া গণতন্ত্রের অগ্রগতির সুযোগ নেই। আরও গণতন্ত্রের শুরু ও অগ্রগতির জন্য একমাত্র নির্বাচন ব্যতীত আর কোনো পথও নেই। অন্য কোনো পথ খুঁজতে গেলে জনমনে সন্দেহের উদ্রেক হবে, জনগণ হতাশ হবে, গণতন্ত্র আবারও মুখথুবড়ে পড়বে।
আমীর খসরু বলেন, দেশের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে তারা বিদায় করেছে। সুতরাং এই দেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ কীভাবে পরিচালিত হবে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিত্বমূলক সংসদ গঠন করতে হবে। এর ব্যতিক্রম কিছু করার সুযোগ নেই। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর জনগণের প্রত্যাশা ছিল- একটি সুষ্ঠু-গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রতিনিধিত্বশীল সংসদের মাধ্যমে তারা তাদের মালিকানা ফিরে পাবে।
বিএনপি অনেক আগেই সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে জানিয়ে দলটির এই নীতি-নির্ধারক বলেন, খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ এর মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে, পরপর দুবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। এছাড়া দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্যের কথাও বলা হয়েছে। এগুলো ছয় বছর আগে খালেদা জিয়া বলেছেন। হাসিনা-পরবর্তী যে বাংলাদেশ হবে, সেটাকে মাথায় রেখে খালেদা জিয়া কথাগুলো বলেছেন। এই সংস্কারগুলো দরকার হবে আগামীর বাংলাদেশে। আজ তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) সেই প্রস্তাবগুলো বলতেছে।
তিনি বলেন, আমরা দুই বছর আগেও যুগপৎ আন্দোলনের দলগুলো নিয়ে রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের ৩১ দফা রূপরেখা দিয়েছি। সুতরাং শেখ হাসিনার পতনের পর আগামীর বাংলাদেশ কেমন হবে, তার প্রস্তাব আমরা আগেই দিয়েছি। সে কথাগুলোর এখন আলোচনা চলছে, নতুন কোনো কিছু নেই। বিএনপি জনগণের ভোটে বিজয়ী হলে আগামী দিনে জাতীয় সরকার গঠনের মাধ্যমে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করবে। বিএনপিসহ যুগপৎ শরিকরা ৩১ দফা বাস্তবায়নে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন- জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটভুক্ত জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী, এনডিপির চেয়ারম্যান ক্বারি আবু তাহের ও মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল সোহেল, এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এস এম শাহাদাত ও মহাসচিব সাইফুল আলম, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল ইসলাম, ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র দাস, এনপিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য নবী চৌধুরী প্রমুখ।
মন্তব্য করুন