অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু উপদেষ্টা আওয়ামী প্রেতাত্মাদের সুরে কথা বলছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক, দলটির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে মিরপুর ৬ নম্বর কেন্দ্রীয় মসজিদ মাদ্রাসা দারুলউলুমে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে খাবার ও শীতবস্ত্র বিতরণ এবং পল্লবী ট ব্লকে বাদ জুমা পল্লবী থানা যুবদলের আয়োজনে দুস্থ এতিমদের মাঝে খাবার পরিবেশন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আমিনুল হক বলেন, রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা বসে আছে, এই আওয়ামী প্রেতাত্মারা বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে বেড়াচ্ছে। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু উপদেষ্টা রয়েছেন- তারা আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মাদের সুরে কথা বলছে। এটা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি বলেন, আমরা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বারবার আহ্বান করছি- এই ষড়যন্ত্রকারীদের নির্মূল করেন, তাদের অপসারণ করে আইনের আওতায় এনে বিচার করুন। কিন্তু তাদের সেদিকে খেয়াল নেই। তারা শুধু বারবার বলছে, আমরা সংস্কার করব, সংস্কারের মাধ্যমে আমরা নির্বাচন দেব।
সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, সংস্কার যুগের পর যুগ চলতে থাকবে। নির্বাচিত সরকার এলেই দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরে পরিপূর্ণভাবে সংস্কার হবে। দেশ পরিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পাবে।
বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন দিয়েছে একটি নিরপেক্ষ সরকার হিসেবে। আমরাও সমর্থন দিয়েছি একটি নিরপেক্ষ সরকার হিসেবে। কিন্তু জনগণ সেই নিরপেক্ষতা দেখতে পাচ্ছে না।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ কিন্তু আপনাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষের চাওয়া ও প্রত্যাশা অনুযায়ী আপনারা দ্রুত সময়ের ভিতরে একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিন।
বাংলাদেশের মানুষ গত ১৫ বছর ধরে কেউ ভোট দিতে পারেনি উল্লেখ করে আমিনুল হক বলেন, বাংলাদেশের মানুষ অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়েছে নিরপেক্ষভাবে বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে। বাংলাদেশের মানুষের যে চাওয়া একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। যে নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।
তিনি বলেন, গত ১৭ বছরে আন্দোলন সংগ্রামে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার আমাদের বহু ভাইদের গুম, খুন ও হত্যা করেছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আমাদের বহু ছাত্র ভাইদের এবং সাধারণ মানুষ ও বিএনপির বহু নেতাকর্মীদের গুলি করে হত্যা করেছে। এরপরও এই আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসররা রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
দুস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে খাবার ও শীতবস্ত্র বিতরণকালে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এবিএমএ রাজ্জাক, গাজী রেজাউলনুল হোসেন রিয়াজ, মাহাবুব আলম মন্টু, মহানগর উত্তরের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন মোল্লা, ইবরাহীম খলিল, পল্লবী থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক কামাল হুসাইন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক আনিছুর রহমান, মোকছেদুর রহমান আবির, পল্লবী থানা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মাহফুজ হোসাইন খান সুমন, পল্লবী থানা যুবদলের সভাপতি হাজি নূর সালাম, রূপনগর থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জি. মজিবুল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহমেদ রাজু, থানা বিএনপির সিনিয়র সদস্য এম আশরাফুল ইসলাম, রূপনগর থানা ছাত্রদল সভাপতি মনিরুজ্জামান রনি, মিরপুর ৬ নম্বর মসজিদ কমপ্লেক্স কমিটির সভাপতি মো. সারাফেত আলী, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক, পল্লবী ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান ফরহাদ, সাধারণ সম্পাদক আউয়াল ইসলাম তপনসহ প্রমুখ নেতা উপস্থিত ছিলেন।
মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শুক্রবার বাদ জুমা ঢাকা মহানগর উত্তরের ২৬টি থানা ও ৭১টি ওয়ার্ডের মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় কোরআন খতম, দোয়া ও তবারক বিতরণ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন