দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের প্রস্তাব প্রসঙ্গে এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক বলেছেন, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার জন্য বাংলাদেশ এখনো প্রস্তুত কিনা ভাবতে হবে কারণ উন্নত রাষ্ট্রসমূহেও দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদে গুরুত্বপূর্ণ আইন পাস করতে দীর্ঘ জটিলতায় পড়তে হয়।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) নির্বাচন ব্যবস্থা ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে এবি পার্টির মূল্যায়ন জানাতে পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ব্যারিস্টার সানী বলেন, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা না করে এক কক্ষ বিশিষ্ট আইন সভায় নারীদের সংরক্ষিত ৫০ আসনের পাশাপাশি আরও ৫০টি সংরক্ষিত আসন রেখে তা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও বিভিন্ন পেশাজীবীদের জন্য উন্মুক্ত রাখার প্রস্তাব করেছিলাম আমরা।
তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রার্থীর বয়সের চেয়ে প্রার্থীর বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলি নির্ধারণকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।
সংবিধানের মূলনীতিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের আলোকে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারকে যুক্ত করায় কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক বলেন, এটি আমাদের সুপারিশ ছিল। তিনি বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ দেখলেই মনে আসতো জনগণ মানেই প্রজা, যার ফলশ্রুতিতে শাসকরা রাজা বনে যেতেন। তাই আমরা এটা সংশোধন করতে জনগণতন্ত্র করার মত দিয়েছিলাম। এটা সংস্কার কমিশন গ্রহণ করেছে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে নেতারা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ পুনর্গঠন বা রাষ্ট্র সংস্কারের যে জনদাবি ছিল সেটাকে সামনে রেখে সরকার বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। অতীতে সরকার যত কমিশন গঠন করেছিল তার রিপোর্ট কখনো জনগণের সামনে আসেনি। এই প্রথম সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট জনগণের সামনে উপস্থাপিত হওয়ায় সংস্কার কমিশন ও সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে এবি পার্টি।
সাংবাদিকদের পুলিশ, র্যাব ও আনসারের পোষাক পরিবর্তন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, পোশাক কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে বাহিনীগুলোর আচরণ, সার্ভিস ও দেশের প্রতি কর্তব্যপরায়ণতার মাধ্যমে।
নির্বাচন কেন্দ্রিক এক প্রশ্নের জবাবে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আমরাই প্রথম নির্বাচনের সময়সীমা ২ বছরের কথা বলে ছিলাম, ঘুরে ফিরে এখন সেই বিষয়টিই আলোচিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, কেউ কেউ প্রশ্ন করেন এই সরকারের ম্যান্ডেট কি? আমরা সুস্পষ্ট ভাবে বলতে চাই গণঅভ্যুত্থান নিজেই একটি স্বতন্ত্র ম্যান্ডেট। জনগণ একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকার গঠন করেছে, যার ফলে এটি জনগণেরই সরকার।
দলের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে পুরো রিপোর্ট নিয়ে পার্টির মূল্যায়ন ও বক্তব্য তুলে ধরেন এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক।
উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল অব. দিদারুল আলম, লে. কর্নেল অব. হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি যুবপার্টির সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকন, গাজীপুরের সদস্য সচিব আমজাদ খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব আহমেদ বারকাজ নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক শাহজাহান বেপারী, মহানগর উত্তরের যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুর রব জামিল, সুমাইয়া শারমিন ফারহানা, আন্তর্জাতিক বিভাগের সদস্য হাজরা মেহজাবিন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শরণ চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
মন্তব্য করুন