বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, রাষ্ট্র ও সমাজে বৈষম্য বিলোপে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো মনোযোগ দেখা যাচ্ছে না। রাজনৈতিক সংস্কারে সরকারের যত আগ্রহ সমাজের সীমাহীন বৈষম্য দূরীকরণে সরকারের তেমন আগ্রহও নেই। অথচ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বৈষম্য দূর করতে না পারলে রাজনৈতিক সংস্কার তেমন কোনো কাজে দেবে না, রাজনৈতিক সংস্কার টেকসইও হবে না।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
দলটির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, সাইফুল হক বলেন, সবার আগে দরকার দুর্বৃত্ত মাফিয়াদের অর্থনীতির মূলোৎপাটন করা।
তিনি আরও বলেন, পাঁচ মাস পার হলেও অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দল ও জনগণের নজিরবিহীন বিপুল সমর্থনকে উপযুক্তভাবে কাজে লাগাতে পারছে না। তাদের ওপর জনগণের বিরাট আস্থার মর্যাদাও তারা রাখতে পারছেন না। কাজের অগ্রাধিকারও তারা ঠিক করতে পারছেন না।
বাজার পরিস্থিতি এখনো অনেকটা বেসামাল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার কোনোভাবেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। জীবন জীবিকা নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা অব্যাহত রয়েছে।
সাইফুল হক বলেন বলেন, অস্বাভাবিকভাবে শতাধিক পণ্যের ওপর ভ্যাট ও কর আরোপের সিদ্ধান্ত বাজারের আগুনে পুড়তে থাকা মানুষের ওপর বিপদ চাপিয়ে দেওয়ার শামিল। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষ যখন দিশেহারা, তখন এই পদক্ষেপ কষ্টে থাকা মানুষের দুর্ভোগ আরও চরমে নিয়ে যাবে।
এসব পদক্ষেপ একদিকে গরিব ও স্বল্প আয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা আরও ঝুঁকিতে ফেলে দেবে, আর অন্যদিকে শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি পেলে পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়বে, বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হবেন।
তিনি আরও বলেন, সরকারের অদক্ষতা ও ব্যর্থতার দায়ে মানুষ শাস্তি পেতে পারে না। তিনি আইএমএফ এর পরামর্শে নেওয়া নিত্য ব্যবহৃত পণ্যের ওপর ভ্যাট ও কর বৃদ্ধির আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। সরকারের সাম্প্রতিক এসব পদক্ষেপ বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থি। তিনি আমলাতান্ত্রিক ভাবে নেওয়া এসব সিদ্ধান্তসমূহ প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান।
তিনি সরকারের সংস্কার কমিশন সম্পর্কেও কেন্দ্রীয় কমিটিকে অবহিত করেন।
পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় বক্তব্য রাখেন পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, শহীদুল আলম নান্নু, রাশিদা বেগম, সজীব সরকার রতন, ফিরোজ আহমেদ, সাইফুল ইসলাম, মীর রেজাউল আলম, ডাক্তার মনোয়ার হোসেন, আইয়ুব আলী, শাহীন আলম প্রমুখ।
সভার শুরুতে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রাক্তন সদস্য মোখলেছুর রহমান, ডা. খন্দকার মোসলেউদ্দিন, সিপিবির পাক্তন সভাপতি শহীদুল্লাহ্ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয় এবং এক মিনিট দাঁড়িয়ে তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।
মন্তব্য করুন