রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতারা মনে করেন, আমলাদের মহার্ঘ ভাতা দিতে কিংবা আইএমএফের শর্ত মানতে গরিবের উপর জুলুম করে ভ্যাট বৃদ্ধি, গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। যা গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে মনে করেন তারা।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় তোপখানা রোডে দলের প্রধান কার্যালয়ের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিলে বক্তারা এসব কথা বলেন। ভ্যাট বৃদ্ধি, গ্যাসের দাম বাড়ানো এবং ট্রাক সেল বন্ধের প্রতিবাদে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
দলের প্রধান সমন্বয়ক ও সমাবেশের প্রধান বক্তা হাসনাত কাইয়ূম বলেন, সরকার আমলাদের মহার্ঘ ভাতা দিতে এবং আইএমএফকে খুশি করতে গরিবের গলায় ছুরি ধরেছে, পেটে লাথি মারছে। এ সময় এসব দুষ্কর্ম থেকে অবিলম্বে সরকারকে নিবৃত হতে আহ্বান জানান তিনি।
সরকারের বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের রিপোর্টকে স্বাগত জানিয়ে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, যে সময় দেশের প্রয়োজন ছিল গণঐক্য নিশ্চিত করে সংস্কারের পথে এগিয়ে যাওয়া, সে সময় পরিকল্পিতভাবে প্রশাসন ও পুলিশের ছত্রছায়ায় বিভিন্ন জায়গায় গণঅভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর উপর হামলা করা হচ্ছে। কুড়িগ্রামে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমাবেশে হামলা করেছে জামায়াত-শিবির। মতিঝিলে পাহাড়ি ছাত্র-জনতার উপর আক্রমণ এবং পরবর্তীতে সে ঘটনার প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের আক্রমণ আওয়ামী জুলুম, নিপীড়নের কথা মনে করিয়ে দেয়।
সরকারকে বুঝতে হবে তার বন্ধু কে আর ষড়যন্ত্রকারী কারা? তারা যদি আমলাদের মহার্ঘ ভাতা দিতে কিংবা আইএমএফের শর্ত মানতে গরিবের উপর জুলুম করে, তাহলে সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের পক্ষের সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে কঠিন আন্দোলন গড়ে তুলবে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া সরকারের জবাবদিহিতা দাবি করেন। তিনি বলেন, আগে সরকারের সব উপদেষ্টা, আমলা, এনবিআরের সব কর্মকর্তার সম্পদের হিসাব দেন, রাষ্ট্রের আয়-ব্যয়ের হিসাব দেন, তারপর আমরা বিবেচনা করব ভ্যাট বাড়ানো হবে, নাকি কমানো হবে। এক তরফা ভ্যাট বা গ্যাসের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করা হলে তার ফলাফল খুবই খারাপ হবে সতর্ক করে দেন তিনি।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসিরউদ্দিন, রাষ্ট্র সংস্কার শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি মিন্টু মিয়া, রাষ্ট্র সংস্কার যুব আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক মাশকুর রাতুল, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি আহমেদ ইসহাক প্রমুখ। রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক রোকন ওসমানের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের জাতীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য আদিল আমজাদ হোসেন।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল পল্টন হয়ে প্রেস ক্লাবে গিয়ে শেষ হয়।
মন্তব্য করুন