বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, জুলাই বিপ্লবের ৫ মাস পার না হতেই এ বিজয়ের কৃতিত্ব নেওয়ার জন্য লড়াই শুরু হয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, জুলাই বিপ্লব কারও একক কৃতিত্বে সফলতা আসেনি।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) উদ্যোগে দলটির প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হান্নান আহমেদ খান বাবলুর স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, গত ১৫ বছরে যারা খুন হয়েছেন, গুম হয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন- তাদেরসহ এ আন্দোলনে ছাত্র, শিশু, শ্রমজীবী সবারই অবদান রয়েছে। এটি তো সবাই ভাগ করতে পারে, একা নিলে কাঁধ ভারী হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, দীর্ঘ দেড় দশক আগে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমরা যে লড়াই শুরু করেছিলাম, তা একদফায় রূপান্তরিত হয়েছিল। যে কারণে একদফায় পরিণত হয়েছিল, সেই একই কারণে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি হয়েছিল, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। একই কারণে নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল। দুঃখের বিষয়, কোনো না কোনোভাবে এ বিজয় ছিনতাই হয়ে যায়। জুলাই বিপ্লবের ৫ মাস পার না হতেই এ বিজয়ের কৃতিত্ব নেওয়ার জন্য লড়াই শুরু হয়েছে।
নজরুল আরও বলেন, এখন অনেকে দাবি করছেন, তারাই জানে- কীসে জনগণের কল্যাণ। একই ট্যাবলেট খাওয়ানোর চেষ্টা হয়েছিল স্বাধীনতার পরও। যারা মুক্তিযুদ্ধে যায়নি- তারাই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা শুনিয়েছে। এখন এমন একটি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, যেখানে জনগণ তাদের মত প্রকাশ করতে পারে, ভোটাধিকার প্রয়োগ করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এটিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার বিদায় নিয়েছে সত্য, কিন্তু নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকারের প্রেতাত্মারা এখনো সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিরাজ করছে এবং নানামুখী সমস্যার সৃষ্টি করছে। কতগুলো নন-ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে রাজনীতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করা হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনের বিষয় যেখানে সামনে আসার কথা, তা না এনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা কেন সামনে আনা হচ্ছে? কার স্বার্থে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয় সামনে আসছে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত হলে নতুন করে ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের ডালপালা গজাবে। পতিত স্বৈরাচার আবারও পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে। শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদবিরোধী যে লড়াই আমরা শুরু করেছি, সেটা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। এ দেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। এ ব্যাপারে আমাদের সব রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
জাতীয় পার্টির (জাফর) যুগ্ম মহাসচিব এএসএম শামীমের পরিচালনায় স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য দেন- দলটির মহাসচিব ও সাবেক এমপি আহসান হাবিব লিংকন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় পার্টির (জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক এমপি নওয়াব আলী আব্বাস খান, সেলিম মাস্টার, জোবায়ের হায়দার অয়ন, যুগ্ম মহাসচিব কাজী মো. নজরুল, যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন সরকার, ছাত্র সমাজের সভাপতি কাজী ফয়েজ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান অভি প্রমুখ।
মন্তব্য করুন