কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বন্ধু রাজনৈতিক দলের মাথা খারাপ হয়ে গেছে : নুরুল ইসলাম

নুরুল ইসলাম বুলবুল। ছবি : কালবেলা
নুরুল ইসলাম বুলবুল। ছবি : কালবেলা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নেতাদের উদ্দেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, দেশের মানুষ ইতোমধ্যেই জামায়াতের দীর্ঘ ১৭ বছরের কোরবানির কারণে এ দলের প্রতি আস্থা রাখছে। ন্যায়বিচার, বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে ছাত্রদের ও জামায়াতের চাওয়া এক হয়ে গেছে। তাই বন্ধু রাজনৈতিক দলের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এখনো সময় আছে সোজা পথে চলুন।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে ডেমরা থানা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জামায়াত মহানগরীর আমির।

তিনি বলেন, জনগণ জানে দেশে কারা দুর্নীতি, চাঁদাবাজিতে নিমজ্জিত। আমরা তাদের বলি, আপনাদের মুখে জামায়াতের সমালোচনা মানায় না। দেশে ন্যায়বিচার, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ এই নতুন প্রজন্মের চাওয়া। এর বিরুদ্ধে যারা যাবে তাদের খাওয়া নেই ভবিষ্যতের বাংলাদেশে।

স্বাধীনতার পরই দেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিবেশী দেশের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল মন্তব্য করে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, বাংলাদেশ থেকে চেতনার নামে ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করার চক্রান্ত করেছিল ষড়যন্ত্রকারী একটি গোষ্ঠী। যারা দেশে ব্যাংক লুট, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, গুম, খুন করে জনগণের জীবনকে দুর্বিষহ করে দিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, চেতনার নামে আওয়ামী লীগ যা করেছে তা ’৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রকৃত চেতনা নয়। এজন্যই ২০২৪-এ ছাত্র জনতা তাদের ঝেটিয়ে বিদায় করেছে। বর্তমানে একটি দল আবার দেশে চেতনার ব্যবসা করতে যাচ্ছে। তাদের খেয়াল রাখতে বলব, চাঁদাবাজ, দখলবাজের তালিকা করা আছে। সাবধান হোন, সেই তালিকায় নতুন করে আপনাদের নাম যেন যুক্ত না হয়। অযাচিত বক্তব্য বন্ধ করেন, না হলে তালিকা ছেড়ে দিলে বুঝবেন জনগণের ক্ষোভ।

এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী একাত্তরের তকমা লাগিয়ে ৫৪ বছর জনগণের সঙ্গে চরম প্রতারণা করছে। জামায়াতে ইসলামীর দেশপ্রেমিক নেতার বিরুদ্ধে মানুষকে মিথ্যা গল্প শুনিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের ধ্বজাধারী আওয়ামী লীগ একাত্তরকে পুঁজি করে মূলত এই দেশকে শোষণ করে অভিযোগ করে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের সঙ্গে ৭১-এর পরই তারা চরম বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করে এ দেশে সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল কায়েম করেছিল। নিজ দলীয় গণমাধ্যম ব্যতীত সব গণমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, দুনিয়ার কল্যাণের সঙ্গে আখিরাতের কল্যাণ নিশ্চিতে কাজ করছে জামায়াতে ইসলামী। এ দেশের মানুষের সত্যিকার কল্যাণে ও মুক্তির জন্য ছাত্র-জনতার বিপ্লবে অর্জিত এই নতুন বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিতে অবশ্যই জামায়াতে ইসলামীকে বেছে নিতে হবে। দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলগুলো ৩০ বছর কেবল নিজেরা ভালো থাকার চিন্তা করেছে।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ইসলামকে রাষ্ট্র থেকে বাদ দেওয়ায় দেশে নানাবিধ সেক্টরে অশান্তি তৈরি হয়েছে, যা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও চলছে। মুসলমানদের এই বাংলাদেশে আল্লাহর আইন ছাড়া সুবিচার কখনোই আসবে না। মানুষ নিজের স্বার্থ দেখে, কিন্তু ইসলামী বিধান দেশের প্রতিটি নাগরিকের ভালো থাকার নিশ্চয়তা দেয়।

তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে জাতীয় সংসদে কোরআনের আইনকে যারা বিজয়ী করতে চায় তাদের পাঠাতে হবে। জনগণ যদি তা করতে ব্যর্থ হয় তাহলে আবারও দেশ পশ্চাতে অগ্রসর হবে।

চরিত্র না থাকলে মানুষের কিছুই থাকে না উল্লেখ করে জামায়াতের এই সিনিয়র নেতা বলেন, যারা রাজনীতি করেন তাদের চরিত্রবান হতে হবে। রাজনৈতিক নেতারা চরিত্রহীন হলে দেশের জন্য চরম বিপদ ডেকে আনেন। সুতরাং অবশ্যই সচেতন থেকে মানুষের কল্যাণে এগিয়ে যেতে হবে।

কর্মী সম্মেলনের অন্যতম বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, চাঁদাবাজ-দখলদার যে দলেরই হোক, আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের মোকাবিলা করব। মনে রাখবেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরা পালায় না। অন্য দিকে পালানোর অভ্যাস আওয়ামী লীগের, সে অভ্যাস আর কোনো দল-গোষ্ঠীর মাঝে দেশবাসী দেখতে চায় না।

কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. কামাল হোসাইন ও নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা সেক্রেটারি মো. হাফিজুর রহমান।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও ডেমরা উত্তর আমির মাওলানা মিজানুর রহমান, ডেমরা দক্ষিণ আমির মির্জা হেলাল, মাওলানা কারী আনোয়ার শাহ, ইঞ্জি. খন্দকার কামারাম মুনীর ফুয়াদ, হাসান মুহাম্মদ শিবলী, হাফেজ ইসমাইল আদনান, ইঞ্জিনিয়ার তমিজ উদ্দিন, মো. জসিম উদ্দিন সিকদার, মাওলানা আবু তালেব, মাওলানা মুহা. দেলোয়ার হোসাইন, কেএম মোজাফফর হোসাইন, আক্তারুজ্জামান চয়ন, অধ্যাপক মো. বনি ইয়ামিন, মোহাম্মদ আলীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চালু করতে প্রয়োজনে গণভোট দিন : সেলিম উদ্দিন

‘ভারতে নয়, জজদের প্রশিক্ষণের জন্য মুফতিদের কাছে পাঠান’

বেরোবির ৫৬ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

ঢাবির প্রিন্টমেকিং বিভাগের বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী শুরু

সেই আবেদ আলী দম্পতির ব্যাংক হিসাবে ৪৫ কোটি টাকার লেনদেন

গ্রাফিতির ওপর ‘জয় বাংলা’ লেখায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

পাঠ্যবইয়ে আবু সাঈদের মৃত্যু তারিখ ভুল, যে সিদ্ধান্তে এনসিটিবি

বিএনপি নেতা এসএ খালেকের মৃত্যুতে তারেক রহমানের শোক

‘আমরা আর লাল ফিতার দৌরাত্ম্য চাই না’

ঢাবির নবনির্বাচিত নেতাদের অভিনন্দন জানাল জবির সাদা দল

১০

নারী হওয়ায় হাত মেলালেন না সিরিয়ার নেতা

১১

মিলিয়ন ছাড়াল ‘কালবেলা ড্রামা’র প্রথম নাটক

১২

একদিনেই দুদকের ৩ অভিযান

১৩

ভারতে সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, নিহত ৩

১৪

‘থ্রি-জিরো তত্ত্ব’ বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবে সমবায় মন্ত্রণালয় : আসিফ মাহমুদ

১৫

আনিসকে বিয়ে করতে মালয়েশিয়া থেকে ছুটে এলেন হাসনা

১৬

বাংলাদেশে আরও ৩৬ রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ, রয়েছে বিজিবির হেফাজতে

১৭

ফুরফুরে মেজাজে সামান্থা

১৮

সিলেট জেলা কৃষক দলের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন

১৯

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি গণঅধিকার পরিষদের

২০
X