মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ’৭২-এর সংবিধান প্রশ্নবিদ্ধ করলে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে পরাজিত শক্তি লাভবান হবে বলে মনে করছে গণফোরাম। দলটি বলেছে, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দুঃশাসনকালে সংবিধান লঙ্ঘন করে এবং অবৈধ সংশোধনী এনে জনতাকে নিষ্পেষিত করা হয়েছে। সে দায় সংবিধানের নয়, অপরাধ করেছে শেখ হাসিনা। তাই বিচার করতে হবে শেখ হাসিনার।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) এক যুক্ত বিবৃতিতে গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু ও সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মিজানুর রহমান এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমুন্নত, সে সংবিধানের মূল ভিত্তি বৈষম্যমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মূল ভিত্তি বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশের সংবিধান ও জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মূল স্পিরিটের কোনো অমিল নেই।
এ ছাড়া তারা বলেন, ’৭২ এর সংবিধান নয়, বিচারের মাধ্যমে কবর রচনা করতে হবে দীর্ঘ ১৫ বছর জনগণের অধিকার হরণকারী, হাজার হাজার মানুষকে গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা এবং জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে হাজার হাজার ছাত্র-জনতার হত্যাকারী খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের। বাংলাদেশের জনগণ বিচারের মাধ্যমে তাদের সাজা দিতে চায়। তারা আরও বলেন, ’৭২ এর সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জন-আকাঙ্ক্ষার যে প্রতিফলন ঘটেছে, তা পূরণে রাষ্ট্র ব্যর্থ হয়েছে। তাই পুনরায় জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। সুতরাং ’৭২ এর সংবিধানে সংস্কার এনে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এবং মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অতএব, সংবিধান বাতিল করলে দেশে বিভাজন তৈরি হবে এবং সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পতিত স্বৈরাচার হাসিনা ও তার দোসররা নৈরাজ্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করে পরিস্থিতি সংকটাপন্ন করতে পারে। ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে কোনো ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠীর অপকর্মের জন্য প্রশ্নবিদ্ধ করা সমীচীন নয়।
দল-মত নির্বিশেষে সবার প্রতি আহ্বান, সংবিধানের যৌক্তিক সংস্কারের মাধ্যমে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ঐক্য সুসংহত রাখতে আসুন জাতীয় ঐক্য অক্ষুণ্ন রাখি।
মন্তব্য করুন