কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৩ পিএম
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘বাংলাদেশ আজ দুই ভাগে বিভক্ত’

বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের লোগো। ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের লোগো। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, দেশের স্বার্থবিরোধী ফ্যাসিবাদী আওয়ামী গোষ্ঠী পালালেও তাদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। বাংলাদেশ আজ দুইভাগে বিভক্ত। একভাগে ভিনদেশি দালাল, আরেক দিকে দেশপ্রেমিক জনতা।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের ১৫ বছর পূর্তিতে যুব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ভিনদেশি চক্র ১৫টি বছর এক সেবাদাসীকে দিয়ে বাংলাদেশকে জিম্মি করে রেখেছিল। ৫ আগস্টের বিপ্লবের পর তারা সেই কৃতদাসীকে তুলে নিয়ে গেছে। তারপর থেকে একের পর এক নতুন ষড়যন্ত্র করছে। সচিবালয়ে অগ্নিসংযোগ তারই একটি অংশ।

এর সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আগুন দিয়ে তোমরা বাংলাদেশের কাগজ পুড়িয়ে ফেলতে পার। কিন্তু হাজার মানুষের মনে তোমাদের ব্যাপারে যে ঘৃণা জন্মেছে তা মুছে ফেলতে পারবে না।

মামুনুল হক বলেন, এর আগে ইসকনকে দিয়ে তাদের বাংলাদেশ ধ্বংসের চেষ্টা প্রকাশ পেয়েছে সাইফুল ইসলাম আরিফের হত্যার মধ্য দিয়ে। টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে যারা রাতের গভীরে ঘুমিয়ে থাকা নিরীহ মুসল্লিদের ওপর হত্যা ও হামলা কাণ্ড ঘটিয়েছে, তারা তাবলিগের সাথী নয়। তারা খুনি ও ভিনদেশি শক্তির অংশ। তাদেরসহ ফ্যাসিবাদের সব দোসরকে রুখে দিতে দেশপ্রেমিক যুবকদের কাজে লাগাতে হবে। সমাবেশ থেকে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, দেশবিরোধী শক্তিদের স্পেস দিলে আপনাদের স্পেস কমে যাবে। আপনাদের হাতে সময় সীমিত। এ সময় যথাযথভাবে কাজে লাগান।

মামুনুল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের আমির ইসমাঈল নূরপুরী। সমাবেশ যৌথভাবে পরিচালনা করেন মাওলানা ফজলুর রহমান, মাওলানা রাকিবুল ইসলাম ও মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ মাহমুদ। অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, জালালুদ্দিন আহমাদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা কুরবান আলী, মাওলানা আব্দুল আজিজ, মাওলানা শরাফত হুসাইন, মাওলানা মাহবুবুল হক, তোফাজ্জল হুসাইন মিয়াজী, সাবেক এমপি শাহিনুর পাশা চৌধুরী, ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি নেছারউদ্দীন, বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম আহমদ, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা শরীফ সাইদুর রহমান ও বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের সভাপতি মুহাম্মাদ কামাল উদ্দীন।

ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, আমরা আর কোনো ফেলানিকে কাঁটাতারে ঝুলে থাকতে দেখতে চাই না। সীমান্ত রক্ষাকারীদের কোনো লাশ দেখতে চাই না। আমরা কোনো বাকশাল দেখতে চাই না। আমরা ছাত্র-জনতার অধিকার আদায় করতে চাই। জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। আন্দোলন ও সংগ্রামের জন্য যখন কোনো ভূখণ্ড তৈরি হয়ে যায় তখন তা দমিয়ে রাখা যায় না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি ছিল বিভাজনের রাজনীতি। কিন্তু চব্বিশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার ছাত্ররা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সেই বিভাজন ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এখন সচেতন হয়েছে। তারা আজ অর্থনৈতিক সংকটে। তারা আর মেগা পরিকল্পনা দেখতে চায় না। আজ বাংলাদেশের মানুষ ব্যাংকে যায় কিন্তু তারা চেক দেখিয়ে টাকা পায় না। পলায়নকারী স্বৈরাচারের দোসররা বিদেশে টাকা পাচার করেছে। তাদের টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা ইসমাইল নূরপুরী বলেন, শেখ হাসিনার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। সে সন্ত্রাসী ছিল। ২০১৩ সালে জিকিররত মুসুল্লিদের ওপর অতর্কিত হামলা করে অসংখ্য আলেম ও ইসলাম প্রিয় জনতাকে শহীদ করা হয়েছে। আজ অনেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি মনে করি, এখনো নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি। শেখ হাসিনা এ দেশ থেকে দেশের সব কাঠামো ধ্বংস করে পালিয়েছে। সুতরাং যারা বলে হাসিনা আবার ফিরে আসবে, স্পষ্ট করে বলতে চাই, তা কখনো সম্ভব না। তা আমরা হতে দেব না। সরকারের বিভিন্ন সেক্টরে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা রয়ে গেছে, তাদের ধরে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। তাহলেই এ দেশে শান্তি ফিরে আসবে।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আশরাফুজ্জামান, মাওলানা এনামুল হক মুসা, মাওলানা আবু সাইদ নোমান, মাওলানা ফয়সাল আহমাদ, মাওলানা আব্দুস সুবহান, মাওলানা মামুনুর রশিদ, মাওলানা জহিরুল ইসলাম, মাওলানা শরীফ হুসাইন, মাওলানা জাহিদুজ্জামান, মাওলানা কারী হুসাইন আহমদ, শহীদুল ইসলাম, মাওলানা আনোয়ার মাহমুদ, মাওলানা মুহাম্মাদ আলী, মাওলানা মাজহারুল ইসলাম ও আশিকুর রহমান জাকারিয়া প্রমুখ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ফ্রিজের মাংসে রক্ত মিশিয়ে বিক্রি

দখলকারীরা যত প্রভাবশালীই হোক, ব্যবস্থা নেওয়া হবে : রিজওয়ানা হাসান

চোরাই অটোরিকশা উদ্ধারসহ গ্রেপ্তার ২ 

পাশের বাড়িতে আগুন লাগলে নিজের রক্ষা হবে না : মির্জা আব্বাস

ফায়ার সার্ভিসকে দেওয়া হলো আগুনের ভুল তথ্য, অতঃপর...

‘মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের মতো জালে পড়বেন না’

‘গত ১৫ বছর মুসলমান মারলে তার বিচার হতো না’

ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে দুদিনে ডিএমপির ২৬৭৮ মামলা

ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার আবেদন আগামীকাল শুরু

আমার প্রধান কাজ গণহত্যার বিচার করা : আসিফ নজরুল

১০

শাহীন আফ্রিদি কি পুরো বিপিএল খেলবেন?

১১

‘অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কাছে ম্যাজিক নেই’

১২

মেহেরপুরে অনলাইন জুয়ার এজেন্ট চ্যানেলসহ গ্রেপ্তার ২

১৩

রেড্ডির শতকে মেলবোর্নে ভারতের লড়াই

১৪

ব্যালন ডি’অর ইস্যুতে মুখ খুললেন রোনালদো

১৫

১৩ বছর পর দেশের মাটিতে কায়কোবাদ, বিমানবন্দরে কর্মী-সমর্থকদের ঢল

১৬

ম্যানইউর মালিক হলে ক্লাবের সমস্যার সমাধান করতেন রোনালদো

১৭

অফিসার পদে নিয়োগ দিচ্ছে ইসলামী ব্যাংক

১৮

৫২ বছরের ইতিহাসে মালদ্বীপের পর্যটনে বড় সাফল্য

১৯

সচিবালয়ে নিহত ফায়ার ফাইটার নয়নের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

২০
X