বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য আগামী ৭ জানুয়ারি লন্ডনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এসময় তার সফরসঙ্গী হবেন চিকিৎসক, নার্স ও ব্যক্তিগত সহকারীসহ ১৫ জনের একটি দল।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে কালবেলাকে এ তথ্য জানান খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী এবিএম আবদুস সাত্তার।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার দিন এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে ৭ জানুয়ারি ঘিরে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার লিভার প্রতিস্থাপন প্রয়োজন। এ ছাড়া ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ফুসফুস, কিডনি, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন গত ২৯ অক্টোবর সাংবাদিকদের জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে প্রথমে ‘লং ডিসটেন্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে’ লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর সেখান থেকে তাকে অন্য একটি দেশে মাল্টিডিসিপ্ল্যানারি মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হবে। সে দেশটি যুক্তরাষ্ট্র বলে জানা গেছে।
দলীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত আগস্টের শুরুতে নবায়নকৃত মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) খালেদা জিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর নভেম্বরে তিনি যুক্তরাজ্যের ভিসার কাজ শুরু করেন। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ছাড়াও সৌদি আরবের ভিসা পেয়েছেন বেগম জিয়া। চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার সময় সৌদি থেকে ওমরাহ করতে পারেন তিনি।
খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী হিসেবে ইতোমধ্যে অন্তত ১৫ জনের একটি তালিকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয়েছে। গত ৩০ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যুক্তরাজ্যে যাবেন এবং ওই দেশের ভিসা পাওয়ার জন্য সহায়তা দেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সফরকারীদের মধ্যে বেগম জিয়ার পরিবার ও তার সহকারী রয়েছেন।
এর আগে ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই তিনি লন্ডন গিয়েছিলেন। এর পর একাধিক মামলার পরোয়ানা মাথায় নিয়ে ওই বছরের ১৮ অক্টোবর দেশে ফেরেন খালেদা জিয়া। ওই সময় তিনি যুক্তরাজ্যের ডা. হ্যাডলি ব্যারির চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টসংক্রান্ত দুদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে যান বিএনপি চেয়ারপারসন। পরে ২০২০ সালের মার্চে তৎকালীন আওয়ামী সরকার নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে বেগম জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দেয়। প্রতি ছয় মাস পরপর তার সাময়িক মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। চলতি বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তন হলে পরদিন (৬ আগস্ট) বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তির আদেশ দেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন।
মন্তব্য করুন