দেশে দুর্নীতি, অনিয়ম ও লাগামহীন চাঁদাবাজির দিকে ইঙ্গিত করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মাদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, যারা দেশে রাজনীতির নামে চাঁদাবাজিতে ব্যস্ত; তাদের রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার সময় এসেছে। কারণ চাঁদাবাজির চেয়ে ভিক্ষাবৃত্তিই উত্তম।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর মগবাজারের রমনা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মধ্যে সেলাই মেশিন ও শীতবস্ত্র বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন। হাতিরঝিল পশ্চিম থানা জামায়াত এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা বলেন, এক শ্রেণির আত্মকেন্দ্রিক ও মূল্যবোধহীন রাজনীতিকের কারণে আমাদের রাজনীতি গণমুখী চরিত্র হারিয়েছে। তারা জনগণের কাছে ভোট নিয়ে নিজেরাই দেশের মালিক-মোক্তার হয়ে যান। তাই রাজনীতির এই অশুভ বৃত্ত থেকে আমাদের অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে। তিনি নেতিবাচক রাজনীতির পরিবর্তে দেশে ইতিবাচক রাজনীতির সূচনা করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।
সেলিম উদ্দিন বলেন, আমাদের দেশের রাজনীতিতে অবক্ষয় এখন প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফলে প্রচলিত রাজনীতি চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, দুর্নীতিবাজ, লুটেরাদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই রাজনীতি থেকে এদের প্রতিহত করতে না পারলে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। জামায়াত একটি গণমুখী রাজনৈতিক দল হিসেবে গণমানুষের কল্যাণে নিরলসভভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সে ধারাবাহিকতায় আমরা অনেক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, দাতব্য প্রতিষ্ঠানসহ অনেক জনহিতকর প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছি। কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধে কোনো চুরি বা অনিয়মের অভিযোগ নেই; বরং আমরা নিজেদের অর্জিত পকেটের টাকা খরচ করেই আর্ত মানবতার সেবায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের দলে দলীয় পদ নিয়ে কোনো মারামারি বা হট্টগোল হয় না, বরং আমাদের সব কর্মতৎপরতা দেশ ও জাতির জন্য নিবেদিত।
তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে যে, দুনিয়া আমাদের আসল ঠিকানা নয় বরং আখেরাতই আমাদের প্রকৃত গন্তব্য। দুনিয়ার ভালো-মন্দ কাজের ওপর আখেরাতে আমাদের জন্য পুরস্কর বা তিরস্কার হিসাবে জান্নাত-জাহান্নাম নির্ধারিত হবে। আর মানবজাতির হেদায়েতের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যুগে যুগে নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের ভয়ের কোনো কারণ নেই, বরং দেশের ১৮ কোটি মানুষ আপনাদের সঙ্গে আছেন। তাই কারো মুখের দিকে না তাকিয়ে নির্ভয়ে চাঁদাবাজিসহ দেশের সসব ধরনের অপরাধ প্রবণতা কঠোরহস্তে দমন করতে হবে। আমরা আসন্ন রমজানে বেশি দামে পণ্য কিনতে চাই না। তিনি বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রতি শূন্য সহনশীলতা প্রদর্শনের আহ্বান জানান। অন্যথায় সরকারের সক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
থানা আমির ইউসুফ আলী মোল্লার সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি রাশেদুল ইসলাম রাশেদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, হাতিরঝিল অঞ্চল পরিচালক হেমায়াতে হোসাইন এবং মহানগরীর প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক, সহকারী অঞ্চল পরিচালক মু. আতাউর রহমান সরকার। উপস্থিত ছিলেন- থানা নায়েবে আমির নূরুল ইসলাম আকন্দ, জামায়াত নেতা মাওলানা গোলাম মাওলা, শামীম হোসাইন ও পেশাজীবী নেতা আব্দুল কুদ্দুস প্রমুখ।
মন্তব্য করুন