হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান বলেছেন, টঙ্গী ইজতেমার ময়দানে যখন আমাদের তাবলিগের সাথী ভাইরা গভীর রাতে তাহাজ্জুত পড়ছিলেন এবং তাদের অনেকেই ঘুমন্ত ছিলেন, ঠিক তখনই চিহ্নিত আওয়ামী দোসর সাদপন্থিরা পরিকল্পিতভাবে অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ৪ জনকে শহীদ করেছে এবং অসংখ্য সাথী ভাইকে আহত করেছে।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে ঘুমন্ত ও তাহাজ্জুতরত নিরীহ তাবলিগ জামাতের ওপর সাদপন্থিদের পরিকল্পিত হামলাকে ‘দুই পক্ষের সংঘর্ষ’ হিসেবে মিডিয়ায় অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের জোরালো দাবি, অবিলম্বে হামলায় জড়িত সাদপন্থি সবাইকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে। একইসঙ্গে তাদের আওয়ামী ও ভারতীয় ষড়যন্ত্রমূলক নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে তাদের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। এ ছাড়া ভিকটিম পক্ষের সবাইকে আমরা শান্ত থাকার আহ্বান করছি।
তারা বলেন, একপক্ষীয় হামলার এ ঘটনাকে ‘দুই পক্ষের সংঘর্ষ’ হিসেবে অপপ্রচার চালিয়েছে ভারতের এজেন্ট হিসেবে চিহ্নিত একদল মিডিয়া। এমন নির্লজ্জ হলুদ সাংবাদিকতার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। নিজস্ব রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা অনুযায়ী কোনো ঘটনাকে ‘সংঘর্ষ’ আর কোনো ঘটনাকে ‘হামলা’ বা ‘তাণ্ডব’ বলা কোনোভাবেই বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার উদাহরণ নয়। তাদের অন্তত লজ্জা হওয়া উচিত।
নেতারা আরও বলেন, বিতর্কিত ভারতীয় আলেম মাওলানা সাদের অনুসারী দাবি করে তাবলিগে বিভাজনের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে দ্বিনের মুখোশধারী একদল চিহ্নিত আওয়ামী দোসর। ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমল থেকেই সাদপন্থিরা আওয়ামী লীগের তাঁবেদারি করে শুধু তাবলিগে বিভাজনই নয়, আলেম-ওলামার বিরুদ্ধেও বিদ্বেষমূলক প্রপাগান্ডা চালিয়েছে।
তারা আরও বলেন, বিগত ২০১৮ সালের ডিসেম্বরেও তারা ইজতেমা ময়দানে দিনের আলোতে লোহার গেট ভেঙে নিরীহ আলেম-ওলামা ও মাদ্রাসাছাত্রদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে নৃশংস হামলা চালায়, যার ভিডিও প্রমাণ এখনো রয়েছে। তখনো ১ জন নিহতসহ আহত হন অজস্র সাথী ভাই। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর হওয়ায় তখন তাদের বিচার করা সম্ভব হয়নি। যদিও তখন থেকে উম্মাহর ঐক্য বিনষ্টকারী এই সন্ত্রাসী সাদপন্থিদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ শুরু হলেও ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
তা ছাড়া নেতারা বলেন, আমরা আশাবাদী, ছাত্র-জনতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ দেশে সাদপন্থি সন্ত্রাসীদের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করবে এবং টঙ্গীর ময়দানে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সব দোষীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করবে।
মন্তব্য করুন