স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে একদিনের জন্য হলেও আয়না ঘরে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি বলেন, ভারতে বসে শেখ হাসিনা আরামে কফি খাচ্ছেন, পার্কে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আপনাকে বাংলাদেশে আসতেই হবে, বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে। আপনি যদি বেগম খালেদা জিয়াকে জেলখানায় পাঠাতে পারেন তাহলে আপনাকেও কাশিমপুর কারাগারে যেতে হবে।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী চালক দলের উদ্যোগে ‘নির্বাচনী রোড ম্যাপ ও জন আকাঙ্ক্ষা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি অবিলম্বে নির্বাচনের স্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
ভারতের উদ্দেশ্যে জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, আপনারা দয়া করে সোজা হয়ে যান। বিজয় দিবস নিয়ে মমতা কি বলল, মোদি কি বলল তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। বিএনপি তিনটি সংগঠন আগরতলার উদ্দেশ্যে লংমার্চ করছে। আগরতলার পাশে ভারতের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া যথেষ্ট। বাংলাদেশের মানুষ অনেক সচেতন। গরিব হতে পারে, কিন্তু মনটা বড়। তিনি বলেন, জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নষ্ট করার জন্য আবার ষড়যন্ত্র চলছে। শহীদ জিয়ার জনপ্রিয়তাকে নষ্ট করার ষড়যন্ত্র চলছে। দেশে আওয়ামী লীগের লোকজন ঝামেলার সৃষ্টি করে বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে অন্য ধর্মের মানুষ ভালো আছে। হিন্দুদের উপর অত্যাচার হচ্ছে এগুলো বলে কোনো লাভ নেই।
১৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠানে ওসমানী কেন আসল না এমন প্রশ্নে রেখে বিএনপির সাবেক এই চিফ হুইপ বলেন, তাকে আসলে আসতে দেওয়া হয়নি। হেলিকপ্টার আসলে কি খারাপ ছিল? নাকি পাকিস্তান আত্মসমর্পণ করার পর আধুনিক সব অস্ত্র ভারতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল? আপনারা সহযোগিতা করেছেন তাই আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু পাকিস্তানের ৫০০ টাকার নোটগুলো আপনারা নিয়ে গেছেন। তখন ইন্ডিয়ার এক টাকা পাকিস্তানের এক টাকা কত ছিল? জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ভারত সমান্তরাল নামে আমার দেশের সম্পদ লুট করে নিয়ে যাবে, আমার দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করবে। এই দেশের বিরোধী দলকে জোর করে নির্বাচনে আনবে। তাই বিএনপি অবশ্যই বিরোধিতা করবে। ২০১৪ সালে হাসপাতালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের করুণ অবস্থা আমরা দেখেছি।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ওদের (ভারত) কথায় চিন্তা করার দরকার নেই, দেশের মানুষের কথা ভাবুন। ওবায়দুল কাদের ৩ মাস পর কীভাবে দেশ থেকে পালায় সেটা নাকি উপদেষ্টারা জানে না, তাহলে জানেন কে? সংস্কারের নামে নির্বাচন পেছানোর কোনো মানে হয় না। সামনে রোজা আসছে, তাই আওয়ামী লীগের কোনো লোকজন যাতে সিন্ডিকেট না করতে পারে সে বিষয়ে দৃষ্টি রাখুন।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেন, নির্বাচন নিয়ে এই সরকারের কাছ থেকে আমরা সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাচ্ছি না। প্রধান উপদেষ্টা এক কথা বলছেন, আবার তার প্রেস সচিব পরদিন আরেক কথা বলছেন। জনগণ দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছে, রাজনৈতিক নেতারাও শঙ্কায় রয়েছে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অবিলম্বে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিন।
আয়োজক দলের সভাপতি জসীম উদ্দিন কবিরের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, রকিবুল ইসলাম রিপন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মীর আমির হোসেন আমু, বাংলাদেশ চালক দলের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল খন্দকার প্রমুখ।
মন্তব্য করুন