আলোচনা সভায় গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, গণঅভ্যুত্থানের কোনো কোনো নেতা অর্থের বিনিময়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য কাজ করছে। জুলাই বিপ্লবের শহীদ ও আহতদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করে কেউ কেউ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপস করতেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় ভৈরব প্যালেস পার্টি সেন্টারে জুলাই বিপ্লব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আবু হানিফ বলেন, বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগকে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগও তাদের খোলস পাল্টে সেই সুযোগ নিচ্ছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর সেনাপ্রধান তার বক্তব্যে বলেছিলেন, ৬২৬ জনকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাদের পরবর্তী অবস্থান সম্পর্কে সেনাপ্রধান কোন বক্তব্য দেয়নি, আমরা ৬২৬ জনের তালিকা জানতে চাই এবং তারা কে কোথায় আছেন সেটাও জানতে চাই।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে, এই সরকারকে জনগণ বসিয়েছে, তাই সরকারকে জনগণের পার্লস বুঝতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি আসন্ন নির্বাচন নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম বক্তব্য আসছে, এমনকি প্রধান উপদেষ্টার সবশেষ বক্তব্যেও নির্বাচনের রোডম্যাপের বিষয়টি স্পষ্ট নয়। তাই নির্বাচনের রোডম্যাপের বিষয়ে সরকারকে স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে।
হানিফ বলেন, ২০১৮ সালের ঐতিহাসিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল আজকের ছাত্র অধিকার পরিষদ। বাংলাদেশে বিরোধী মতের উপর যখন দমনপীড়ন চলছিল তখনও অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাজপথে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ। এমনকি বিগত সময়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়েও সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছে। সর্বশেষ জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। রাজনীতিতে তরুণদের সম্পৃক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। ২৪ সালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি।
এসময় তিনি বলেন, এই জুলাই বিপ্লবে গণঅধিকার পরিষদ ও অঙ্গসংগঠনের ১২ হন শহীদ হয়েছে, কমপক্ষে ১ হাজারের বেশি আহত হয়েছে। আমাদের দলের প্রধান ভিপি নুরুল হক নুর জেল কেটেছে। আমাকে র্যাব রাতে অন্ধকারে তুলে নিয়েছিল, দুইদিন গুম ছিলাম, জেল কেটেছি, কোনো কিছু পাওয়ার আশায় জেল খাটিনি, দেশের জন্য মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুঃখজনক জুলাই বিপ্লবে একসঙ্গে যারা লড়াই করেছে তাদের ভিতর বিভক্তি দেখ। যাচ্ছে। এই বাংলাদেশে কোনো গণহত্যাকারীদের স্থান হবে না। জুলাই বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে আমরা দেখছি দেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ কারীদের টার্গেট করে হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে পতিত আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। সেই বিষয়ে সরকার কে আরও সক্রিয় হতে হবে, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের দ্রুত সময়ের ভিতরে আটক করতে। কিন্তু সরকার দৃশ্যত কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সমালোচনা করে তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তার দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করত না পারলে ওনার উচিত দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া। আওয়ামী লীগ জুলাই গণহত্যায় নেতৃত্ব দিয়েছে, আওয়ামী লীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষ তাদের রাজনীতি করতে দিবেন না।
কিশোরগঞ্জ জেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, ছাত্র জনতার নেতৃত্বে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। এই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এখন তরুণদের নেতৃত্ব দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। আগামীর বাংলাদেশ হবে তরুণদের বাংলাদেশ, আগামীর বাংলাদেশ হবে বৈষম্যহীন।
ছাত্র নেতা বিন ইয়ামিন সরকার জুনায়েদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, কিশোরগঞ্জ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মুশফিকুল ইসলাম, ইমতিয়াজ আহমেদ কাজল সাবেক সদস্য সচিব ভৈরব উপজেলা গণঅধিকার পরিষদ, মোমেন উদ্দিন জনি আহ্বায়ক কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা গণ অধিকার পরিষদ, সৈয়দ আলীউজ্জাম মহসিন সাবেক আহ্বায়ক কটিয়াদি উপজেলা গণঅধিকার পরিষদ, ভৈরব উপজেলার গণঅধিকার পরিষদের নেতা শামসুল হক মামুন, ভৈরব উপজেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা আবির, আমজাদ, ইমরান প্রমুখ।
মন্তব্য করুন