কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘আ.লীগের সুবিধাভোগী ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও আমলারা বহাল তবিয়তে’

‘ছাত্র-গণহত্যা ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সিটি ও পৌর কাউন্সিলরদের জনস্বার্থে পুনর্বহালের দাবি ও বর্তমান সরকারকে সহযোগিতার লক্ষ্যে’ আয়োজিত কাউন্সিলর সমাবেশ। ছবি : কালবেলা
‘ছাত্র-গণহত্যা ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সিটি ও পৌর কাউন্সিলরদের জনস্বার্থে পুনর্বহালের দাবি ও বর্তমান সরকারকে সহযোগিতার লক্ষ্যে’ আয়োজিত কাউন্সিলর সমাবেশ। ছবি : কালবেলা

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বারদের বহাল রেখে সিটি ও পৌর কাউন্সিলরদের বাতিল করা গ্রহণযোগ্য নয়। অথচ আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বার ও আমলারা এখনো বহাল তবিয়তে। যে আমলারা আওয়ামী লীগের দালালি করেছেন তাদের সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার দায়িত্ব দেওয়া গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ সিটি ও পৌর কাউন্সিলর কর্তৃক ‘ছাত্র-গণহত্যা ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সিটি ও পৌর কাউন্সিলরদের জনস্বার্থে পুনর্বহালের দাবি ও বর্তমান সরকারকে সহযোগিতার লক্ষ্যে’ আয়োজিত কাউন্সিলর সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, চট্টগ্রামের মেয়র আর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-সদস্যরা এমন কি ভাষায় তওবা করল যে দিল্লি খুশি, আওয়ামী লীগ খুশি, অন্তর্বর্তী সরকারও খুশি। কিন্তু যা সিটি করপোরেশন ও পৌর কমিশনারদের দায়িত্ব না দেওয়ার সিদ্ধান্তটা সাংঘর্ষিক।

তিনি বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাস্তবতায় আমরা দেখলাম স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সকল স্থানীয় প্রশাসনে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, ইউনিয়ন পরিষদ ছাড়া সকলকে বাতিল করে দিয়েছেন। যেহেতু আওয়ামী আমলে নির্বাচন হয়েছে, ফ্যাসিবাদের আমলের কোনো নির্বাচনকে গ্রহণ করি না। ন্যায্য মনে করি না, বৈধও মনে করি না। সেই জায়গা থেকে তারা এটা করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে মেয়র ফের কীভাবে কোর্টেরমাধ্যমে মেয়র হলো তাহলে? ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে তো আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরাই নির্বাচিত হয়েছে। তাহলে পৌর আর সিটি মেয়ররা এমন কি কবিরা গুনাহ করল যে এইটা তওবা করে মাফ হচ্ছে না? যে যুক্তিতে আপনি বাতিল করেছেন, ওই যুক্তিতে সবাইকে বাতিল করা উচিত ছিল।’

আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আমলে নির্বাচনে হয়েছে অতএব নির্বাচন বৈধ হয় নাই, ন্যায্য হয় নাই। বিরোধী দলগুলোও মানে নাই। এজন্য বাতিল করলাম। কিন্তু রিপ্লেসমেন্ট বসালেন কাদেরকে? আমলাদেরকে? এই আমলারা রাতে ভোট করছে না? এই পুলিশ, এই আমলা, এই সেনা কর্মকর্তারা বাটপারি করে হাজার হাজার কোটি টাকা মালয়েশিয়া, টরেন্টোতে পাচার করে নাই? যে আমলারা বাটপার, যারা গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের দালালি করেছে, সেই দালালদের দিয়ে আপনি নির্বাচিত প্রতিনিধিদের রিপ্লেস করলেন? এটা কোনো ধরনের রিপ্লেসমেন্ট অন্তর্বর্তী সরকারের? এইটা কি গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট হতে পারে?’

তিনি বলেন, ‘তাহলে যে আমলারা তাদের নিজেদের কাজটা আন্তরিকতার সঙ্গে, সততার সঙ্গে, মেধা-যোগ্যতার সঙ্গে করে না, সেই আমলাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়েছেন মেয়র-কাউন্সিলরের। উপজেলা পরিষদ চালানো, জেলা পরিষদ চালানোর? এরা কি ফেরেশতা নাকি?’

তাই অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তটা যৌক্তিক না, ন্যায্যও না। এমনকি গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের সঙ্গে যায় না বলে তিনি মনে করেন।

আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘তাই আমলাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে একটি যাচাইবাছাই উপকমিটি করে সিটি ও পৌর কাউন্সিলরদের পুনর্বহালের দাবি জানাই।’ এ লক্ষ্যে যারা আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ১৪ দলের বাটপারির সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের তালিকা তৈরি করা। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে যারা সক্রিয় ছিল তাদের তালিকা করা। এ ছাড়া যারা মিছিল করেছে, গুলিবিদ্ধ হয়েছে, জেলে গিয়েছে, মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছে তার তালিকা করার আহ্বান করেন আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।

এ ছাড়াও গত ১৬ বছরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যারা বিভিন্ন জায়গায় সক্রিয় ছিলেন, নির্যাতিত হয়েছেন- এই ধরনের ক্রাইটেরিয়াসহ যাদের বিরুদ্ধে টাকা-পয়সা পাচার, লুটপাট, নারী নির্যাতন, দুর্নীতির কোনো অভিযোগ নেই; এই রকম ৪টা-৫টা ক্রাইটেরিয়ার নির্ধারণ করে তাদের ফের কাজে পুনর্বহাল করার দাবি জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘প্রান্তিক মানুষের সেবা নিশ্চিত করার জন্য একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় কাউন্সিলরদেরকে একটা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে, তাদের সম্মানের সঙ্গে পুনর্বহাল করা।’ এ ছাড়া কাউন্সিলরদের সম্মানী ভাতা ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ করারও দাবি জানান তিনি।

বাংলাদেশ সিটি করপোরেশন কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কাজী গোলাম কিবরিয়ার সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সম্পাদক ও নাগরিক কমিটির সহমুখপাত্র সারজিস আলম, বাংলাদেশ পৌর কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম মধু, বাংলাদেশ পৌর কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান জাহিদসহ অনেকে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ফেনীতে ১৩২ পরিবারে গৃহনির্মাণ সামগ্রী দিলেন আমেরিকান প্রবাসীরা

সাংবাদিক তুরাব হত্যা মামলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দস্তগীর গ্রেপ্তার

৩১ দফা সফল করে জুলুম-নির্যাতনের জবাব দেব : তারেক রহমান

ইজতেমায় হামলা নিয়ে যা বললেন হেফাজতের আমির

এবার ভারতকে ট্রাম্পের সতর্কবার্তা

গুমের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট স্থগিত, দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

‘শিক্ষাখাতে মোট বাজেটের ৫ শতাংশ বরাদ্দের ব্যবস্থা করতে হবে’

বেনাপোল ও খুলনা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে নতুন ট্রেন

‘হিল্লা বিয়ের’ ফতোয়া নিতে মাদ্রাসাশিক্ষকের কাছে নারী, অতঃপর...

দুই শিক্ষার্থী হত্যা: জড়িতদের ধরতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম

১০

৫৩ বছর ধরে শিক্ষাকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে : জাতীয় নাগরিক কমিটি

১১

ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু

১২

৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই ষড়যন্ত্রকারীদের জবাব দেওয়া হবে : তারেক রহমান

১৩

বিজয় দিবস কাবাডি শুরু বৃহস্পতিবার

১৪

ঢাকা-খুলনা নতুন রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে ২৪ ডিসেম্বর

১৫

গুম-খুনে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে : খন্দকার এনাম 

১৬

কোনো ষড়যন্ত্রকারী দেশের ক্ষতি করতে পারবে না : আমিনুল হক 

১৭

‘কুয়েত-বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে যুক্ত’

১৮

সৌদিতে বেকায়দায় হাজারো সিঙ্গেল মাদার

১৯

মোটরসাইকেল ও ট্রাকের সংঘর্ষে ২ বন্ধু নিহত

২০
X